গাজীপুরে শ্রীপুরের এক স্পিনিং মিলের গুদামে মঙ্গলবার ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে। কারখানার ভিতরে আটকা পড়ে এক নিরাপত্তা কর্মী নিহত হয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিটের কর্মীরা সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করছিল। আগুনে ওই গুদামে থাকা তুলাসহ অন্যান্য মালামাল পুড়ে গেছে ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

নিহতের নাম মোঃ রাসেল মিয়া (৪৫)। তিনি ময়মনসিংহের পাগলা থানার উলুন এলাকার আলা উদ্দিনের ছেলে। সে ওই কারখানার কোয়ার্টারে থেকে নিরাপত্তা কর্মীর কাজ করতো।

শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রাম প্রসাদ পাল, শ্রীপুর থানার এসআই জীবন কুমার বিশ^ শর্মা ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নয়নপুর এলাকার অটো স্পিনিং মিলের তুলার গুদামে মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে অগ্নিকা-ের সূত্রাপাত হয়। মুহুর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এসময় ফায়ার এলার্ম বেজে উঠলে কারখানার কর্মীরা হুড়োহুড়ি করে কারখানা থেকে বেরিয়ে আসে। হুড়োহুড়ি করে বের হতে গিয়ে অন্ততঃ ৫ শ্রমিক আহত হয়েছে। কারখানার কর্মীরা ও স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের শ্রীপুর, জয়দেবপুর ও ভালুকা ষ্টেশনের ৭টি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনাস্থলে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। পানি সংকট ও কারখানার অভ্যন্তরীন রাস্তা সংকীর্ণ হওয়াতে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানোর জন্য কাজ করছেন। এদিকে আগুন নেভাতে গিয়ে ওই কারখানার টয়লেটের ভিতরে আটকা পড়ে নিরাপত্তা কর্মী রাসেল। আগুনের লেলিহান শিখার কারণে সেখান থেকে বের হতে না পেরে ধোঁয়ায় শ^াসরুদ্ধ হয়ে টয়লেটের ভিতরেই নিহত হয় কারখানার নিরাপত্তা কর্মী রাসেল মিয়া। পরে দেওয়াল ভেঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নিহতের লাশ উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন। আগুনে গুদামে থাকা তুলা ও অন্যান্য মালামাল পুড়ে গেছে ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা নুরজাহান আক্তার জানান, কারখানার টয়লেটে আটকা পড়েছিল নিরাপত্তা কর্মী রাসেল। আগুন লাগার পরপর কারখানার ফায়ার এ্যলার্ম বাজানো হয়। কারখানার কিছু শ্রমিক কারখানার নিজস্ব অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থার মাধ্যমে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে টয়লেটের ভেতর রাসেলের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হয়। কারখানার অন্যান্য শ্রমিক ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কারখানার ভেতর দিয়ে তাকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে টয়লেটের দেওয়াল ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহমুদ হাসান জানান, রাসেলকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আগুনে পোড়ার দাগ রয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আগুনের ধোঁয়ায় শ^াসরুদ্ধ হয়ে সে মারা গেছে।