দেশের মামলা জট কমাতে সিঙ্গাপুর থেকে সহায়তা গ্রহণ করবে বাংলাদেশ। সিঙ্গাপুরের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করে তাদের অভিজ্ঞতা থেকে জ্ঞান নেওয়ার কথা জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

তিনি বলেন, মামলা জট সমস্যাটা সিঙ্গাপুরেও ছিল। তারা সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠেছে। তাই আমরা তাদের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু জ্ঞান নেব। তাদের দেশের অনেকগুলো পদক্ষেপ আমাদের দেশে গ্রহণ করা সম্ভব। যেটা বাস্তবসম্মত।

বুধবার (৩ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে আইনমন্ত্রীর আবাসিক চেম্বারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী এসব কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনের আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের হাই কমিশনার ডেরেক লোহ’র সঙ্গে বৈঠক করেন আইনমন্ত্রী।

দুপুর পৌনে একটায় সৌজন্য সাক্ষাতে আসেন সিঙ্গাপুরের হাই কমিশনার। তারা প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন তারা।বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা মূলত দুইটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। বিষয় দুটি হলো আইন সংক্রান্ত ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত।সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহের কথা জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী মহল আমাদের দেশে বিনিয়োগে খুব আগ্রহী। হাই কমিশনার জানিয়েছেন যে, বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন, পরিবেশ তাদের দেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য অনুকূলে। তাই সে দেশ থেকে প্রচুর বিনিয়োগ এ দেশে আসছে।

আনিসুল হক বলেন, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য আমরা বিনিয়োগ বান্ধব আইন করেছি। আমাদের দেশে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করে ১০০ শতাংশ মুনাফা নিয়ে যেতে পারেন, যেটি আর কোনো দেশে নাই। এমন অনেক সুযোগ সুবিধা আমাদের দেশে বিনিয়োগ করলে পাওয়া যায়। তারপরও বিনিয়োগের পরিবেশ আরও উন্নত করার প্রয়োজন হলে আমরা সংবিধানের মধ্যে থেকে আইন সংশোধন করব।

২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গঠনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সিঙ্গাপুর আমাদের পাশে থাকবে বলেও জানান আইনমন্ত্রী।

আলোচিত রিফাত হত্যা মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, আপনারা দেখেছেন নুসরাত হত্যা মামলা আইনানুগ সকল ফরমালিটিজ সম্পন্ন করে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এটা আমাদের নির্দেশ। কোনো মামলায় যখনি পুলিশি প্রতিবেদন পাওয়া যাবে তখনি বিচারিক আদালতে বিচারিক কার্যক্রম শুরু করতে প্রসিকিউটরদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ব্যবসা প্রসঙ্গে হাই কমিশনার ডেরেক লোহ বলেন, বাংলাদেশে তাদের রাজনীতি ও ব্যবসা যেভাবে পরিচালনা করে সেটিকে পাশে রেখেই আমরা দুই দেশ নিজেদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বিনিময় করতে পারি। আমি মনে করি, এ দেশে বিনিয়োগের জন্য এটিই আমাদের মূলনীতি। বাংলাদেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট।

বৈঠকে বিনিয়োগ,সম্পর্কোন্নয়নের বিভিন্ন উপাদান, বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুরের আইনসংক্রান্ত বিষয়, সেগুলোর আধুনিকায়ন, শান্তি কর্মসূচিসহ বিভিন্ন বিষয়েই আলোচনা হয়েছে বলে জানান হাইকমিশনার। সৌজন্য সাক্ষাতে সিঙ্গাপুরের তিনজন প্রতিনিধি ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।