গাজীপুরে শ্রীপুরের এক স্পিনিং মিলে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনায় পুড়ে অঙ্গার হয়ে নিহত আরো ৫জনের লাশ বুধবার উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এ নিয়ে ওই অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিহত মোট ৬জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এরআগে প্রায় ১২ ঘন্টা চেষ্টার পর বুধবার ভোর রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের কর্মীরা। তারা আগুন পুরোপুরি নেভাতে সন্ধ্যা পর্যন্ত ড্যাম্পিং করছিল। অগ্নিকান্ডের এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদিকে কারখানায় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে অনুদানের ঘোষণা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। এদিকে বিকৃত লাশের পরিচয় নিশ্চিত হতে ডিএনএ নমূনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

বুধবার যাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তারা হলেন, কারখানার সিনিয়র উৎপাদন কর্মকর্তা গাজীপুরে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকার ভান্নারা গ্রামের মৃত শামছুল হকের ছেলে সেলিম কবির (৪২), উৎপাদন বিভাগের কর্মী শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের হাছেন আলীর ছেলে শাহজালাল (২৬), কারখানার এসি প্ল্যান্টের কর্মী গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার দক্ষিণ ধনুয়া গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে আনোয়ার হোসেন (২৭), একই প্ল্যান্টের কর্মী পাবনা জেলা আমিনপুর থানার নান্দিয়ারা গ্রামে কেরামত সরদারের ছেলে সুজন সরদার (৩০) ও ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানার ভুবনপোড়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মোঃ আবু রায়হান (৩৫)। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের পাগলা থানার হরিপুর মোহলুল এলাকার আলা উদ্দিনের ছেলে কারখানার নিরাপত্তাকর্মী মোঃ রাসেল মিয়ার (৪৫) লাশ উদ্ধার করা হয়।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামান, শ্রীপুর থানার ওসি লিয়াকত আলী, কারখানার জিএম হারুন অর রশিদসহ স্থানীয়রা ও উদ্ধার কর্মীরা জানান, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নয়নপুর ফরিদপুর এলাকার অটো স্পিনিং মিলের কারখানার ব্যাক প্রসেসিং (তুলা থেকে সুতা তৈরীর প্রাথমিক) ইউনিটে মঙ্গলবার দুপুর সোয়া দুইটার দিকে অগ্নিকান্ডের সুত্রপাত হয়। প্রসেসিং মেশিনে ঘর্ষণে সৃষ্ট আগুনের স্ফুলিঙ্গ তুলার স্তুপে ছিটকে পড়লে এ অগ্নিকান্ডের সূত্রাপাত হয়। একতলা টিন শেড ভবনের সিলিংয়ে তুলার ডাষ্ট থাকার কারনে আগুন দ্রুত কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ঘটনার সময় কারখানার “বি” শিফটের প্রায় সাড়ে চারশত শ্রমিক কাজ করছিল। ওই কারখানায় তিন শিফটে প্রায় ১৫শ জন শ্রমিক কাজ করে। অগ্নিকান্ডের সময় ফায়ার এলার্ম বেজে উঠলে কারখানার কর্মরত কর্মীরা হুড়োহুড়ি করে কারখানা থেকে বেরিয়ে আসে। হুড়োহুড়ি করে বের হতে গিয়ে অন্ততঃ ৫ শ্রমিক আহত হয়েছে। কারখানার কর্মীরা ও স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়। আগুন তুলার গুদামসহ পুরো কারখানায় ছড়িয়ে পড়ায় কয়েক শ্রমিক বের হতে না পেরে কারখানার ভিতরে আটকা পড়ে। এ ঘটনায় কারখানার নিরাপত্তকর্মীসহ ৬জন নিখোঁজ থাকে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের শ্রীপুর, জয়দেবপুর ও ভালুকা ষ্টেশনের ৭টি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। পরে পর্যায়ক্রমে সদর দপ্তরসহ আশেপাশের বিভিন্ন ষ্টেশনের আরো অন্ততঃ ১১টি ইউনিটের কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। কিন্তু কারখানার অভ্যন্তরীন রাস্তা সংকীর্ণ হওয়ায় এবং ঘটনাস্থলের প্রায় তিন বর্গ কিলোমিটারের এলাকায় কোন পুকুর না থাকায় পানি সংকট দেখা দিলে আগুন নেভাতে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। এতে আগুনের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পেয়ে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। একপর্যায়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে আগুন নেভানোর জন্য মহাসড়কের বিপরীত পাশের মেঘনা সাইকেল কারখানা থেকে পাইপ দিয়ে পানি সংগ্রহ করে ফায়ার সার্ভিসের মোট ১৮টি ইউনিটের কর্মীরা। প্রায় দেড়ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় ওই মহাসড়কের উভয়দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পানি সরবরাহের পাইপের উপর ইট বালু ফেলে যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। প্রায় ১২ ঘন্টা চেষ্টার পর বুধবার ভোররাত আড়াইটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আগুন নেভানোর কার্যক্রম চলাকালে বুধবার ভোরে কারখানার ধ্বংস স্তুপ থেকে আনোয়ার হোসেন, শাহজালাল ও সেলিম কবিরের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। পরে দুপুরে সুজন সরদার ও আবু রায়হানের অঙ্গার দেহ উদ্ধার করে তারা। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কারখানার নিরাপত্তাকর্মী মোঃ রাসেল মিয়ার লাশ টয়লেট থেকে উদ্ধার করা হয়। নিহতদের মধ্যে সেলিম কবির, শাহজালাল, সুজন হায়দার ও আবু রায়হানের (চারজনের) দেহ আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে বিকৃত হয়ে গেছে। অপর দু’জন আনোয়ার ও রাসেলের লাশ অবিকৃত ছিল। ধারণা করা হচ্ছে তারা আগুনের ধোঁয়ায় শ^াসরুদ্ধ হয়ে মারা যায়। নিহত ৬জনের লাশ উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করা হয়। আগুন পুরোপুরি নেভাতে বুধবার বিকেল পর্যন্ত ড্যাম্পিং ও উদ্ধার কাজ করছিল ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামান জানান, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিহত ৬জনের মধ্যে আগুনে পুড়ে চারজনের লাশ অঙ্গার হয়ে বিকৃত হওয়ায় সেগুলো চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে অঙ্গার হওয়া লাশগুলোর মধ্যে সুজন ও আবু রায়হানের লাশ উচ্চতার দিক বিবেচনা করে চিহ্নিত করার দাবী করেছে তাদের স্বজনরা।

নিখোঁজ শাহজালালের ভগ্নিপতি ইমরান জানান, পুড়ে যাওয়া মৃতদেহগুলো চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে শাহজালাল যে কক্ষে কর্মরত ছিল ওই কক্ষের পাশ থেকে একটি লাশ উদ্ধার হওয়ায় ধারণা করছি এটাই শাহজালালের লাশ।

অপরদিকে নিখোঁজ আনোয়ারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার চাচাতো ভাই। আনোয়ারের চাচাতো ভাই সজিব জানান, আগুনের পরপরই তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। এক দেড় ঘন্টা পর তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরদিন ভোরে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সম্পুর্ণ শরীর পুড়ে গেলেও তার মুখের দাঁড়ি না পোড়ায় আমরা নিশ্চিত এটাই আনোয়ারের লাশ।

ফায়ার সার্ভিসের ওই কর্মকর্তা আরো জানান, প্রায় ১২ ঘন্টা পর বুধবার ভোর রাত আড়াইটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে আগুন পুরোপুরি নেভাতে সন্ধ্যা পর্যন্ত ড্যাম্পিং করছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ধারণা করা হচ্ছে, বৃহষ্পতিবার দুপুরের আগে আগুন নেভানোর কাজ সম্পন্ন হবে। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কারখানার অবকাঠামো ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যেকোন সময় তা ভেঙ্গে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগুনে তুলা ও সুতাসহ কারখানার রিং ও ববিন সেকশনসহ পুরো কারখানা ও গুদামে থাকা বিভিন্ন মালামাল পুড়ে যায় ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও বুধবার বিকেল পর্যন্ত ধ্বংসস্তুপের বিভিন্নস্থান হতে আগুনের ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। তবে আগুনের প্রকৃত কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

তদন্ত কমিটি ॥
শ্রীপুর উপজেলার নয়নপুরের ফরিদপুর এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ‘অটো স্পিনিং লিমিটেড কারখানায় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেকে প্রধান করে ছয় সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। এছাড়াও নিহতের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পঁচিশ হাজার টাকা অনুদানের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম এ তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শাহীনুর ইসলামকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিচালক এর প্রতিনিধি (উপ-পরিচালক পদমর্যাদার), জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, শ্রীপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, গাজীপুরের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এর উপ-মহাপরিদর্শক এবং গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর উপ-সহকারী পরিচালক।

তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শাহীনুর ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিটি আগুন লাগার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান, ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিতকরণ, ক্ষয়-ক্ষতির নিরুপন এবং এরূপ ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় সুপারিশমালা প্রদান করবে।

ডিএনএ’র নমুনা রেখে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে ॥
গাজীপুরে শ্রীপুরের নয়নপুর এলাকায় অটো স্পিনিং মিলস্ লিমিটেড কারখানার অগ্নিকান্ডে নিহতদের ডিএনএ’র নমুনা রেখে নিহতদের লাশ তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। নিহত ৬জনের মধ্যে চারজন আগুনে পুড়ে বিকৃত হয়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে দুটি লাশ অবিকৃত থাকায় বুধবার সেগুলো তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শ্রীপুর থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, শ্রীপুরের অটো স্পিনিং মিলে অগ্নিকান্ডে নিহত ছয় জনের মধ্যে আনোয়ার ও রাসেলের মরদেহ অবিকৃত অবস্থায় থাকায় পরিবারের কাছে মরদেহ গুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত অপর চারজন শাহজালাল, সেলিম কবির, সুজন সরদার ও মোঃ আবু রায়হানের লাশ বিকৃত হওয়ায় সেগুলো পুরোপুরি শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে নিহতের স্বজনরা বিভিন্ন ভাবে তাদের মরদেহ চিহ্নিত করেছেন। তবুও নিহতদের লাশ নিশ্চিত ভাবে শনাক্ত করতে সেগুলো গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে ডিএনএ’র নমুনা রেখে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

এদিকে অগ্নিকান্ডে নিহত আনোয়ার হোসাইনের দাফন তার নিজ বাড়িতে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

সহকর্মীদের বাঁচাতে গিয়ে পুড়ে অঙ্গার হলেন উৎপাদন কর্মকর্তা সেলিম ॥
গাজীপুরে শ্রীপুরের অটো স্পিনিং মিলে অগ্নিকান্ডের সময় সহকর্মীদের বাঁচাতে গিয়ে আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে নিহত হয়েছেন ওই কারখানার কর্মকর্তা সেলিম কবির।

নিহতের স্বজনরা ও কারখানার কর্মীরা জানান, গাজীপুরে শ্রীপুরের অটো স্পিনিং মিলের সিনিয়র উৎপাদন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন সেলিম কবির (৪২)। গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ইউনিয়নের ভান্নারা গ্রামের শামসুল হকের ছেলে সেলিম কবির প্রায় আড়াই বছর ধরে ওই স্পিনিং মিলে কর্মরত ছিলেন। স্ত্রী সখিনা বেগম, ৯ বছরের ছেলে সাবিদ হোসেন ও ৯ মাস বয়সের সাজিদ হোসেনকে নিয়ে থাকতেন কারখানার অফিসার কোয়ার্টারে। মঙ্গলবার দুপুরের খাবার খেয়ে অফিস কক্ষে বসেছিলেন। এ সময় হঠাৎ কারখানায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকান্ডের খবর শুনে তিনি ছুটে যান তার দায়িত্বে থাকা রিং সেকশনে। সেখান থেকে শ্রমিকদের নিরাপদে তিনি বের করতে থাকেন। শ্রমিকরা একে একে সবাই কারখানা থেকে বের হয়। ওই সেকশনের সবাই বের হওয়ার পর অন্য সেকশনের কক্ষের ভিতরে আর কেউ আছে কি-না তার খোঁজ নিতে তিনি কারখানার আরো ভিতরে প্রবেশ করেন। ইতোমধ্যে আগুনে কালো ধোঁয়ায় চতুর্দিক অন্ধকার হয়ে পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, কালো ধোঁয়ায় পথ হারিয়ে ভিতরে আটকা পড়ে আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে সেখানেই তিনি মারা যান।

সেলিম কবিরের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে তার স্ত্রী সখিনা বেগম শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। স্বামী হারানোর শোকে তিনি বারবার মূর্ছা যেতে থাকেন। তাদের বড় ছেলে স্থানীয় অপটিমাল নামের একটি কিন্ডারগার্টেনে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সাবিদ হোসেন বুধবার দুপুরে বাবার হাতে খাবার খাওয়ার জন্য বায়না ধরে কান্নাকাটি করতে থাকলে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। কারখানার জেনারেল ম্যানেজার (এডমিন) হারুন উর রশিদ জানান, সেলিম কবির কারখানার কর্মচারী-শ্রমিকদের কাছে খুবই প্রিয় ছিলেন। অগ্নিকান্ডের সময় তিনি চলতি বি-শিফটের রিং বিভাগে কর্মরত ছিলেন। ঘটনার সময় ইচ্ছে করলেই তিনি নিরাপদে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারতেন। কিন্তু নিজের কথা বিবেচনা না করে সহকর্মীদের নিরাপদ করতে গিয়ে প্রাণ হারালেন।