দেশ ও জাতিকে আভ্যন্তরীণ বা বহিঃশত্রুর থেকে রক্ষা করা বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর প্রথম কাজ। সরকারি এবং বেসরকারি প্রশাসনের ব্যর্থতায়, বিশেষ করে যেখানে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর উর্ধতম কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সর্বস্তরে দুর্নীতির ছোঁয়া লেগেছে, যেমন টাকা ছাড়া পুলিশ নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রচার হয় সে দেশে পুলিশে স্বাভাবিক নিয়োগ প্রক্রিয়া কী? যে দেশে কোনো অপরাধীকে গ্রেফতারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের প্রয়োজন, লাখ লাখ কর্মকর্তা থাকতেও ভেজালবিরোধী অভিযানে সফলতা নেই, সেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রশাসন কেনো সশস্ত্র বাহিনীকে দেশের এই দূর্দিনে কাজে লাগাচ্ছেন না সেটা বুঝতে পারিনা।

যে দেশে প্রকাশ্য দিবালোকে সন্ত্রাসীরা জীবন্ত মানুষকে রাস্তায় কুপিয়ে হত্যা করছে, শত শত মানুষ পাশে দাঁড়িয়ে দেখছে, মানুষে মানুষে খুনাখুনি, দিনের বেলা; তাও জনসমুদ্রে? যে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, যে দেশে শিক্ষকসমাজ আত্মসম্মানবোধ হারিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত, লোভী, স্বার্থপর ও চরিত্রহীন হয়ে পড়েছে, এত বড় সাহস বঙ্গবন্ধুর দেশে এবং জননেত্রীর প্রশাসনে। এ নিশ্চয় ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়। মনে হচ্ছে এ ধরণের শকুনের দল দেশে জন্মেছে গণতন্ত্রকে ধ্বংশ করতে।

এদিকে পৃথিবীর সমস্ত দেশের কুটনৈতিক বৃন্দ সব কিছু দেখছে, তার পরও তারা নিরবতা পালন করছে, কারণ কি? তারা কি চায় যে সিরিয়া, আফগানিস্তান, ইরাক বা আরো যে সব দেশ সন্ত্রাস এবং দূর্নীতিবাজদের কবলে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে, নিজেরা নিজেদের মধ্যে খুনাখুনি করছে, বাংলাদেশও ঠিক সেই পথে যাক? সারাক্ষণ দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করে দেশের উদীয়মান পথকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে যে সমস্ত রাজাকারর বাচ্চারা উঠে পড়ে লেগেছে, তাদেরকে মেনে নিয়ে কিভাবে দেশ প্রেমিক জাতি নিরবতা পালন করছে?

শত শত কোটি টাকা দূর্নীতি করে দেশ থেকে পাচার করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। একজন কেরানীর শত শত কোটি টাকা ব্যাংকে। তদন্ত চলছে, দুদক নোটিস জারি করছে, যেন এসব কার্লপ্রিট দেশ ত্যাগ করতে না পারে। তারপরও তারা ইমিগ্রেশনের চোখের সামনে দিয়ে শত শত কোটি টাকা নিয়ে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে! সাটেলাইটের তাহলে কি ব্যবহার হচ্ছে? নাকি সেই দুর্নীতির টাকার কিছু অংশ ঘুষ দিয়ে কালপ্রিটরা দেশ থেকে পালিয়ে যাচ্ছে? যাদেরকে মেহেনতি মানুষ, কৃষক কিংবা মজুরের টাকা দিয়ে দেশের বর্ডার রক্ষা করার কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে, আজ তাদের চোখে ধুলো দিয়ে সবাই পালিয়ে যাচ্ছে।

প্রশ্ন আসে কি দরকার আছে তাহলে এ সব জীবন্ত প্রতিমুর্তি পেলে! সর্বপরি দুদক যদি না পারে তার দ্বায়িত্ব পালন করতে, পুলিশ যদি না পারে সৎপথে থেকে দেশকে রক্ষা করতে, সচিবরা যদি না পারে দেশ চালাতে, রাজনিতিবিদরা যদি না পারে দেশ সামলাতে, তবে পুরো দেশের মানুষের কাছে একটিই অনুরোধ, নতুন করে স্বাধীনতার জন্য ঘরে ঘরে দুর্গ তুলে সমস্ত কালপ্রিটদের দেশ থেকে বের করে তালপট্টির দ্বীপে পাঠিয়ে আরেক নতুন অস্ট্রেলিয়া তৈরি কর। যেনো নতুন প্রজন্ম বলতে পারে ২০১৯ সালে দেশের সমস্ত কালপ্রিটদের তালপট্টিতে পাঠিয়ে নতুন অস্ট্রেলিয়া তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ।
ঘৃণা করতেও ঘৃণা করছে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে। জনগণ ভোট দেয়া থেকে বঞ্চিত, জনগণ প্রতিবাদ করা থেকে বিরত হয়ে পুতুলের মত নিরবতা পালন করছে। কারণ কি? তাহলে এই জনগণেরেই আপনজনেরা এসব অরাজকতার জন্য দায়ী?

বাংলাদেশকে ধ্বংশ করতে আর বাকি নেই। বিবেকের মৃত্যু হয়েছে, অথবা তাকে পারালাইজ্ড করে রাখা হয়েছে। যে দেশে ডজন ডজন মন্ত্রী-এমপি থাকতেও ব্যারিস্টার সুমনের কাছে বিপদগ্রস্ত মানুষ ছুটে আসছে, ব্যারিস্টার সুমন সাহেবেকে সব কিছুর জন্য সাহায্যের হাত বাড়াতে আকুতি মিনতি করছে, সে দেশের মানুষ আদৌ কি বিপদমুক্ত হতে পারবে? দেশের আইন সৃংখলা রক্ষা করা কি ব্যারিস্টার সুমনের কাজ? নাকি অন্য কারো?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সবাই আপনার কাছে বিচার চাচ্ছে। বাকিরা (যাদের বেতন দিচ্ছেন) কি করছেন তিনারা? কিভাবে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে? আর সুশাসন ব্যতীত কিভাবে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সাধিত হবে? কি হচ্ছে এসব?
দেশের কিছু মানুষ যখন বেঈমান হয়ে ধ্বংস করে মনুষত্বকে, ঠিক তখন মরণ হয় মানবতার। মড়ক পড়েছে মানবতার আর আবির্ভাব হয়েছে শকুনদের। মড়কের অবশান ঘটিয়ে কখন এই শকুনের দল দূর হবে বাংলাদেশ থেকে সেটাই এখন প্রশ্ন! আল্লাহ তুমি বাংলাদেশকে দানবদের হাত থেকে রক্ষা কর।

রহমান মৃধা, দূরপরবাস সুইডেন