গাজীপুরের শ্রীপুরে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনার পুড়ে যাওয়া অটো স্পিনিং মিলের শ্রমিকরা তাদের পাওনা বেতন ভাতা পরিশোধের দাবীতে রবিবার বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে ওই কারখানার শ্রমিকরা। শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ আগামী বুধবার (১০ জুলাই) শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের আশ^াস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. ইস্কান্দর হাবিবুর রহমান ও কারখানার জিএম হারুন অর রশিদসহ স্থানীয়রা জানান, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নয়নপুর ফরিদপুর এলাকার অটো স্পিনিং মিলে গত ২ জুলাই (মঙ্গলবার) অগ্নিকান্ডের সুত্রপাত হয়। প্রায় ৫২ ঘন্টা ব্যাপী ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে তুলা ও সুতার গুদামসহ ওই কারখানার টিনসেড ভবনের ২নং ইউনিট মালামালসহ পুড়ে যায় ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এসময় কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা কর্মীসহ কারখানার ৬ কর্মী আগুনে পুড়ে নিহত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের কর্মীরা আগুন নেভায়। কারখানাটির ২নং ইউনিটে থাকা কিছু মেশিনপত্রের মাধ্যমে ১নং ইউনিটে উৎপাদন কাজ চালানো হতো। কিন্তু ওইসব মেশিন পুড়ে যাওয়ায় ও ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ১নং ইউনিটও চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর থেকে ওই কারখানার পুরো উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে কারখানার শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়ে। গত কয়েকদিন ধরে শ্রমিকরা জুন মাসের বেতন ভাতাসহ তাদের পাওনাদি পরিশোধের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানিয়ে আসছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধ না করায় শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে রবিবার সকালে শ্রমিকরা ধ্বংস্তুপে পরিনত কারখানার গেইটে অবস্থান নিয়ে জড়ো হতে থাকে। এসময় তারা জুন মাসের বেতন-ভাতাসহ সকল পাওনাদি পরিশোধের দাবীতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের শান্ত কারার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়। একপর্যায়ে পুলিশ কারখানা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ আগামী বুধবার (১০ জুলাই) শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের ঘোষণা দেন। কর্তৃপক্ষের আশ^াসের প্রেক্ষিতে শ্রমিকরা তাদের আন্দোলন স্থগিত করে কারখানা এলাকা ত্যাগ করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

কারখানার জিএম হারুন অর রশিদ জানান, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কারখানার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কারখানার ১নং ইউনিট চাল করতে ব্লু রুমের মেশিনারিজ, ফিনিশিং, কাটিং, ড্রায়িং সিমপ্লেক্স, রিং ফ্রেমসহ বিভিন্ন মেশিনপত্র নতুন করে কিনতে হবে। এতে আরো ২/৩মাস সময় লাগতে পারে। এমতাবস্থায় শ্রমিকরা তাদের জুন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবি করছে। শ্রমিকদের দাবীর প্রেক্ষিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ আগামী ১০জুলাই শ্রমিকদের পাওনা বেতন পরিশোধ করার আশ^াস দিয়েছে।