পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (পিএলএফসিএল) সাবেক ৯ পরিচালকসহ ১১ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এদের কাছে পিপলস লিজিংয়ের পাওনা ২০১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আর এই কারণেই তাদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

সোমবার (১৫ জুলাই)বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ইতিমধ্যে এই সংক্রান্ত নির্দেশনা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সব ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজ ও মাচের্ট ব্যাংককে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশে বাংলাদেশ ব্যাংক এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

যাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে : পিপলস লিজিংয়ের যে ৯ পরিচালকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে তারা হলেন- শামসুল আলআমিন গ্র“পের মালিক ও পিপসের সাবেক পরিচালক নার্গিস আলামিন, হুমায়িরা আলামিন ও আরেফিন শামসুল আলামিন, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের বর্তমান পরিচালক এম মোয়াজ্জেম হোসেন, মতিউর রহমান, ইউসুফ ইসমাইল, বিশ্বজিৎ কুমার রায়, খবিরউদ্দিন মিয়া ও এম শহিদুল হক। এদের মধ্যে খবির উদ্দিনের কাছে পিপলসের পাওনা ১০০ কোটি টাকা, মতিউর রহমানের কাছে ৮৪ কোটি টাকা এবং বিশ্বজিৎ কুমারের কাছে পাওনা ২ কোটি টাকা। অন্যদিকে পিপলসের দুই কর্মকর্তা হলেন- সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপনা পরিচালক কবির মোস্তাক আহমেদ, সাবেক মহাব্যবস্থাপক নৃপেন্দ্র চন্দ্র পন্ডিত। এদের মধ্যে প্রথমজনের কাছে পিপলসের পাওনা ১৪ কোটি এবং দ্বিতীয় জনের কাছে পাওনা দেড় কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, গত ২১ মে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থমন্ত্রণালয়ে পিপলস লিজিংয়ের অবসায়নের আবেদন করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ জুন অর্থমন্ত্রণালয় তা অনুমোদন দেয়। গত ১০ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক অবসায়নের বিষয়টি অনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক পিপলস লিজিং থেকে টাকা উত্তোলনের বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করে। আর ১৪ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক আদালতে অবসায়ক নিয়োগ দেওয়ার জন্য আবেদন করলে আদালত বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিজিএম মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান খানকে সাময়িকভাবে অবসায়ক নিয়োগ দেন। সর্বশেষ ১৫ জুলাই ১১ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হলো।

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালেল ২৪ নভেম্বর পিপলস লিজিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে অনুমোদন পায়। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় রাজধানী মতিঝিলের সিটি সেন্টারে। এছাড়া গুলশান এবং চট্রগ্রামে দুইটি শাখা কার্যালয় রয়েছে। ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। তাদের মোট শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ৬৭.৮৪ শতাংশ এবং উদ্যোক্তা পরিচালদের ২৩ দশমিক ২১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।এছাড়াও প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের শূন্য দশমিক ১৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।