সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন বয়ষ্কদের ছবিতে ভরা। ফেসঅ্যাপ নামের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে ছবিতে বুড়ো হয়ে যাচ্ছে অনেকেই। বয়স কমানোর পাশাপাশি অ্যাপ দিয়ে চুল-দাড়ির ধরনও পাল্টানো যাচ্ছে। এছাড়া স্মার্টফোন থেকে যেকোনো ছবি নিজেদের সার্ভারে আপলোড করে সম্পাদনার কাজও করা যাচ্ছে।

রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের একটি প্রতিষ্ঠান ফেসঅ্যাপ তৈরি করেছে। এটি ২০১৭ সালেই তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। সে সময় গুগল প্লে-স্টোরের সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া অ্যাপগুলোর তালিকায় স্থান করে নেয় এটি। এবার ১০ কোটিরও বেশি মানুষ গুগল প্লে-স্টোর থেকে ফেসঅ্যাপ ডাউনলোড করেছে। অ্যাপ অ্যানির তথ্য মতে, এই মুহূর্তে ১২১টি দেশে আইওএস অ্যাপ স্টোরের তালিকায় সবচেয়ে উপরে আছে ফেসঅ্যাপ।

ফেসঅ্যাপ ব্যবহারের যেসব শর্ত আছে, সেগুলো ব্যবহারকারীকে নিরাপত্তা হুমকিতে ফেলছে। ফেসঅ্যাপ ব্যবহারের শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, এ অ্যাপ ব্যবহার করলে আপনি কোম্পানির সার্ভারে আপলোড করা সব ছবি, নিজের নাম, আপনি কী পছন্দ করেন এসব তথ্য বাণিজ্যিক কারণে ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছেন।

এছাড়া ফেসঅ্যাপকে একটি চিরস্থায়ী, অপরিবর্তনীয়, একচেটিয়া, রয়্যালটি-মুক্ত, বিশ্বব্যাপী, সম্পূর্ণ-অর্থ প্রদান, পুনরুৎপাদন, সংশোধন, অভিযোজন, প্রকাশ, অনুবাদ, বিতরণ, প্রকাশ্যে সম্পাদন ও প্রদর্শনের অনুমতি দিচ্ছেন। ফেসঅ্যাপের এসব শর্তকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা হুমকি বলে মনে করছে অনেকে। কারণ, অনুমতি না নিয়েই ব্যবহারকারীর স্মার্টফোনের সংরক্ষিত ছবি আপলোড করছে ফেসঅ্যাপ।

গত কয়েক বছরে যেটা দেখা গেছে যে, ভাইরাল ফেসবুক অ্যাপসগুলো যেসব তথ্য সংগ্রহ করেছে, মানুষ যেভাবে অনুমান করছে সেভাবে ব্যব্হার করেনি। তবে সংগৃহীত তথ্য ঠিকঠাক সংরক্ষণ করা হয় না। এক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লগইন করার পর চেহারা বদলের সময় ফটো গ্যালারির অ্যাক্সেস চায় ফেসঅ্যাপ। একইসঙ্গে ফেসবুকের সঙ্গে অ্যাপটি ব্যবহার করতে চাইলে কিংবা ফেসবুক থেকে ছবি নিতে চাইলে সেটিরও অনুমতি দিতে হয় ব্যবহারকারীকে। ফলে অ্যাপটি চাইলেই ব্যবহারকারীর ফটো গ্যালারি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিতে পারে। একইভাবে নিতে পারে ফেসবুকের আইডি-পাসওয়ার্ডও। ফলে একটা নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়।