বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় আদালতে ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেছেন নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। আজ বুধবার সকালে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে মিন্নির উপস্থিতিতে তার আইনজীবী এই আবেদন করেন।

রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ধার্য তারিখ ছিল আজ। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিন্নিকে আদালতে হাজির করা হয়। এর আগে হাজির করা হয় মামলার অন্য ১৩ আসামিকে। সকাল থেকেই আদালত এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মিন্নি ও অন্য আসামিদের আদালতে আনা-নেওয়া করা হয়।

মিন্নির আইনজীবী বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার মিন্নি তার জবানবন্দি প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনটি আজ সকালে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে পৌঁছেছে।’

‘মূল নথি নিম্ন আদালতে না আসায় জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. সিরাজুল ইসলাম গাজী মিন্নির জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন শুনানির জন্য আগামী ১৪ আগস্ট পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন’ বলেও জানান তিনি।

কী কারণ দেখিয়ে জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হয়েছে—জানতে চাইলে সাংবাদিকদের মিন্নির আইনজীবী বলেন, ‘যেহেতু মামলাটি স্পর্শকাতর, তাই কারণগুলো এই মুহূর্তে আমরা বলতে চাচ্ছি না।’

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান। ২৩ জুলাই তার পক্ষে ওই জামিন আবেদন করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন সকাল ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বিকেল ৪টায় বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

এ হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়। এ মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে গিয়ে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর থেকে মামলা ভিন্ন দিকে মোড় নেয়।