গাজীপুরে বোনাস ও বেতন ভাতাদি পরিশোধের দাবীতে শুক্রবার এক পোশাক কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-গাজীপুর সড়ক প্রায় ৬ঘন্টা অবরোধ ও অবস্থান ধর্মঘট করেছে। এসময় তারা বিক্ষোভ ও কারখানা ভাংচুর করেছে। বিকেলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আন্দোলনরত শ্রমিক, পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের লক্ষীপুরার তিনসড়ক এলাকাস্থিত স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড পোশাক কারখানার শ্রমিকরা গত কয়েকদিন ধরে তাদের পাওনা জুলাই মাসের বেতন, ঈদ বোনাস ও ওভার টাইম ভাতা পরিশোধের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানিয়ে আসছিল। কিন্তু শুক্রবার সকালে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের পাওনা ঈদ বোনাস ও জুলাই মাসের পুরো বেতন না দিয়ে অর্ধেক বেতন পরিশোধ শুরু করে। এতে কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। শ্রমিকরা সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তাদের পাওনাদির পুরোটা পরিশোধের দাবীতে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবী মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানালে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে কারখানায় হামলা চালিয়ে দরজা জানালার কাঁচ ও আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল ভাংচুর শুরু করে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার পার্শ্ববর্তী ঢাকা-গাজীপুর সড়কে গিয়ে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে তাদের পাওনাদি পরিশোধের দাবীতে বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে সড়কের ওই অংশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে আন্দোলনরতদের বুঝিয়ে শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। কিন্তু শ্রমিকরা তাদের বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি রাখে। এক পর্যায়ে বিকেল পৌণে ৩টার দিকে পুলিশের মধ্যস্থতায় শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের পাওনাদি শুক্রবারের মধ্যেই পরিশোধের আশ^াস দিলে আন্দোলনরত শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ তুলে নিয়ে কারখানার ভিতরে অবস্থান নেয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত শ্রমিকরা তাদের পাওনাদির আশায় কারখানায় অবস্থান করছিল। শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ তুলে নেওয়ার পর প্রায় ৬ ঘন্টা পর ওই সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। ঈদের প্রাক্কালে দীর্ঘ সময় ধরে সড়ক অবরোধের কারণে যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ক্রাইম) মো. শরিফুর রহমান জানান, অর্থাভাবে কারখানা কর্তৃপক্ষ ঈদ বোনাস এবং জুলাই মাসের পুরো বেতন না দিয়ে অর্ধেক বেতন পরিশোধ শুরু করলে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। এক পযায়ে শ্রমিকরা কারখানার দরজা-জানালার কাঁচসহ বিভিন্ন মালামাল ভাংচুর করে এবং সড়ক অবরোধ করে। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও কোন এ্যাকশনে যায় নি।