দীর্ঘ সময় ঝিমিয়ে থাকা কামার পল্লীর মানুষ এখন কর্মচঞ্চল হয়ে উঠছে ফেনীর কামার পাড়া। দম ফেলানোর ফুসরত নেই তাদের। সারা বছরের অন্ন সংস্থানের তীব্র প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত তারা। পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে কামারদের এই ব্যস্ততা। দিনরাত এক করে ফেলছেন কোরবানির পশুর জবাই ও কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি ও সান দেয়ার কাজে। জেলার কয়েকশ কামার পরিবার এ সময়টার জন্যই দিনগুনে থাকেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের তাকিয়া বাজার, রেলগেইট এলাকা, কাশেমপুর, পাঁচগাছিয়া, সদর উপজেলার লস্করহাট, দাগনভূঞা উপজেলার সিলোনিয়া ও সোনাগাজী উপজেলার শহরের প্রায় প্রতিটি কামারশালায় কামাররা বিরতিহীনভাবে কাজ করছেন। ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলা শহর ছাড়াও গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও কামারদের কাজের কমতি নেই। ঈদ উপলক্ষে ক্রেতারা কোরবানীর পশু জবাইয়ের জন্য ছুরি, দা, বটিসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সান দেয়া এবং কেনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। সে লক্ষে কামাররা ও কোরবান আসলে পুরো বছরের ব্যবসা পুষিয়ে নেয়।ফেনী তাকিয়া বাজারের এক কামার শালার মালিক জানান, কামারদের কোনো সংগঠন না থাকায় দাম পাচ্ছেন না তারা। কাজেরও নেই নির্দিষ্ট কোনো রেট। ফলে কঠোর পরিশ্রম করেও ক্রেতাদের কাছ থেকে সন্তোষজনক মূল্য পাচ্ছেন না তারা। ফলে জেলার কয়েকশ কামার পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সোনাগাজী উপজেলার আরেক কামারশালার মালিকের অভিযোগ, ঈদের জন্য সাধারণ মানুষ দা, বটির তৈরির পাশাপাশি অবৈধ কাজে ব্যবহারের জন্য জোরপূর্বক স্থানীয় সন্ত্রাসীরা বড় বড় ছুরি তৈরি করে নিয়ে যায়।সোনাগাজী কামারশালার কিরণ কর্মকার জানান, তিনি দীর্ঘ ৫০ বছর কাজ করে তার জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। তার পরিবারের সদস্যরাও উক্ত কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এবারের আয়ের বিষয়ে তিনি জানান, শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকলে অন্তত লাখ খানেক টাকা আয় হবে।