বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কাজ চলছে। এদিকে আইনমন্ত্রী বলেন, যেসব খুনিকে পুরষ্কার হিসেবে তখনকার সরকার বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিলো চাইলে তাদেরও বিচারের আওতায় আনা যায়।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনিদের শাস্তি তো দুরের কথা উল্টো তাদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরষ্কৃত করে জেনারেল জিয়ার সরকার। এরমধ্যে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া শরীফুল হক ডালিমকে ১৯৭৬ সালে বেইজিং দূতাবাসে নিয়োগ করা হয়। এরশাদের আমলে ১৯৮৮ সালে তাকে কেনিয়ার রাষ্ট্রদূত করা হয়। পলাতক আরেক আসামি নূর চৌধুরী ব্রাসিলিয়ায় ক‚টনীতিক জীবন শুরু করেন। পরে তাকে অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হয় আলজেরিয়া ও হংকং এ। রাশেদ চৌধুরী ১৯৭৬ সালে জেদ্দা দূতাবাসে যোগ দেন। বাকি খুনিদের বেশিরভাগই কোনো না কোনো দেশে ক‚টনৈতিক পদে নিযুক্ত হন।

১২ খুনির মধ্যে ৫জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে, জিম্বাবুয়েতে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে আজিজ পাশা’র। খালেদা জিয়ার আমলে তাকেও মরণোত্তর সুবিধা দেয়া হয়। বাকী ৬জনের মধ্যে ৪জনের কোনো খোঁজ জানে না বাংলাদেশ সরকার। স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ইনডেমনিটি আইন করে শুধু খুনিদের দায়মুক্তি নয় বরং বিভিন্ন দূতাবাসে পুনর্বাসিত করা নিয়ে সাবেক ক‚টনীতিক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, তিনি তাদের বিভিন্ন দেশে পোস্টিং দিয়ে দিলেন। যা আমরা যারা কেরিয়ার ফরেন সার্ভিস অফিসার ছিলাম, তাদের জন্য অপমানজনক ছিলো। দাপটের সাথে তারা তাদের কাজকর্ম চালাতে থাকলেন। ওই খুনিরা পেশাদার ক‚টনীতিকদের নানাভাবে অপদস্থ করতো। এমন কি ওই সময় যারা সরকারে ছিলো তাদের সঙ্গেও সরাসরি বোঝাপরা ছিলো তাদের।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, যারা খুনিদেরকে রক্ষা করে তাদেরকেও সাজা দেয়া যায়, তারাও অপরাধী। যারা তাদের পদ দেয়ার মতো অপকর্ম করেছিলেন সামাজিকভাবে তাদের ধিক্কার জানানো উচিত। খোঁজ নিয়ে জানা যায় দুইজনের একজন নূর চৌধুরী কানাডায় এবং রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। এই দুই খুনিকেই ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, কানাডার সরকারের কাছে আমাদের বক্তব্যগুলো তুলে ধরছি। আমেরিকায় রাশেদ চৌধুরী আছেন তার ব্যাপারে হয়তো একটা সমাধানে আসতে পারবো।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, কিছু লোক কোথায় আছে তা আমরা নির্দিষ্টভাবে জানি না। যারা যারা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি এবং জাতির কলঙ্ক তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসতে কাজ চলছে। এদিকে, পুরো পদক্ষেপের গোপনীয়তা বজায় রাখতে এখনই গণমাধ্যমে অগ্রগতি সম্পর্কে বিস্তারিত বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।