স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর বছর ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকায় মেট্রোরেল চালু হওয়ার কথা। এ লক্ষ্যে প্রকল্পটির কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। আগারগাঁও থেকে মিরপুর হয়ে উত্তরার দিকে এখন দৃশ্যমান ছাই রঙের খুঁটির ওপর মেট্রোরেল রুট ভায়াডাক্ট। এই ভায়াডাক্টের ওপরেই বসবে রেললাইন বা রেলট্র্যাক। এরই মধ্যে মতিঝিল-উত্তরা রুটের জন্য ৮০ শতাংশ রেলট্র্যাক এসে গেছে। আগামী মাসেই মেট্রোরেলে ট্র্যাক বসানো শুরু হবে। একইসঙ্গে বসানো হবে ইলেকট্রিক লাইনও। উত্তরা-আগারগাঁও অংশে মেশিনের মাধ্যমে এগুলো বসাতে তিন থেকে চার মাস সময় লাগবে।

সূত্র জানায়, আগামী বছরের জুনে দেশে মেট্রোরেলের প্রথম পরিপূর্ণ ট্রেন সেট আসবে। এভাবে ওই সময় থেকে পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে ২৪টি ট্রেন সেট আসবে। একেকটি সেটে ছয়টি করে কোচ থাকবে। মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক জানান, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৪৫ শতাংশ। আর পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি ২৪ শতাংশ। উত্তরা-আগারগাঁও অংশে রেলস্টেশন নির্মাণের কাজও প্রায় ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে। আগামী বছরের জুনে যখন পূর্ণাঙ্গ মেট্রো ট্রেন সেট আসবে, তখনই ট্রায়াল রান শুরু হবে। তবে যাত্রী পরিবহন করা হবে উদ্বোধনের পর। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ঢাকাবাসী আগামী বছরের জুনের পর উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে ট্রায়াল রানের মেট্রোট্রেন চলতে দেখবেন।

প্রকল্পের তথ্যানুসারে, ট্রেনে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগবে ৪০ মিনিটেরও কম। মেট্রোরেলে ‘প্রি-পেইড কার্ড’ দিয়ে ট্রেনের ভাড়া পরিশোধ করতে পারবেন যাত্রীরা। আবার টিকিট কেটেও থাকবে ভ্রমণের সুযোগ।

উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মোট ১৬টি স্টেশন থাকবে। উত্তরার দিয়াবাড়িতে হবে মেট্রোরেলের প্রথম স্টেশন উত্তরা নর্থ। এর পরের স্টেশনগুলো হলো- উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয় ও মতিঝিল। প্রতিটি স্টেশন হবে তিনতলা। সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হবে দ্বিতীয় তলায়। সেখানে টিকেট কাউন্টার ও অন্যান্য সুবিধাদি থাকবে। আর ট্রেনের প্ল্যাটফর্ম থাকবে তৃতীয় তলায়।

এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, ‘আমাদের এখানে পৃথিবীর সর্বশেষ প্রযুক্তির কোচগুলো আনা হচ্ছে। যখন এগুলো চলতে শুরু করবে তখন তা অন্যান্য দেশের চেয়ে উন্নতর ও আধুনিক হবে। আর দেশের প্রথম মেট্রোরেল (উত্তরা-মতিঝিল) হবে সম্পূর্ণ এলিভেটেড ও বিদ্যুৎচালিত।