গাজীপুরে মুক্তিপণের দাবীতে কলেজ ছাত্র এক যুবককে অপহরণের দু’দিন পর উদ্ধার করেছে র‌্যাব-১ এর সদস্যরা। এসময় ওই ঘটনায় জড়িত দস্যুতা ও অপহরণ চক্রের ৬জন সদস্যকে ওয়ান শুটারগান ও চাকুসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। অপহরণের শিকার ওই যুবকের নাম মোঃ মেহবুব আলম (২৫)। সে গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার বড়নগর গ্রামের মৃত রমিজ উদ্দিনের ছেলে। সোমবার বিকেলে র‌্যাব-১’র স্পেশালাইজ কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানার কাকড়া গ্রামের মৃত বিল্লাল হোসেনের ছেলে মোঃ আশিকুর রহমান(২৪), ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া থানার বাগবেড় এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ সুলাইমান (২৬), গাজীপুর সদর থানার কাথোরা এলাকার আমান উদ্দিনের ছেলে মোঃ ইমরান হোসেন(২২), মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানার দক্ষিণ তেওতা গ্রামের জামাল হাওলাদারের ছেলে মোঃ রুবেল মিয়া (২৫), জামালপুরের বকশিগঞ্জ থানার কুশল নগর এলাকার খোরশেদ আলমের ছেলে মোঃ শামীম আহম্মেদ (২৪) ও ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার সাকুয়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ মিজানুর রহমান(২৫)। তারা সবাই গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকে।

র‌্যাব-১ এর ওই কর্মকর্তা জানান, গাজীপুরের কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজের ডিগ্রীর ছাত্র মেহবুব আলমকে মুক্তিপণের দাবীতে গত শুক্রবার সকালে জেলা শহরের রাজবাড়ি মাঠ এলাকা হতে কয়েক যুবক অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে আটক করে। স্বজনরা বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করে মেহবুবের সন্ধান পায় নি। একপর্যায়ে অপহরণকারীরা মেহবুব আলমের স্বজনের কাছে মোবাইল ফোনে ৫লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। মুক্তিপণের টাকা দেওয়া না হলে অপহৃতকে হত্যা করার হুমকি দিলে স্বজনরা বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে ওই টাকা অপহরণকারীদের প্রদান করে।

এদিকে অপহরণের দু’দিন পর রবিবার রাতে মুক্তিপণের আরও টাকা নেওয়ার আশায় অপহৃত যুবককে নিয়ে অপহরণকারীরা গাজীপুর সদর থানাধীন সালনা বাজার মসজিদ মার্কেটে এলাকায় অবস্থান করছে। এ গোপন সংবাদ পেয়ে ওই ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুনের নেতৃত্বে র‌্যাব সদস্যরা সেখানে অভিযান চালিয়ে অপহৃত মেহবুব আলমকে উদ্ধার এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপহরণ চক্রের ৬জন সদস্যকে আটক করে। এসময় আটককৃতদের কাছ থেকে ১টি ওয়ান শুটারগান, ৩টি চাকু, ৭টি মোবাইল ফোন এবং নগদ ১০ হাজার ৯৯০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃতরা দস্যুতা ও অপহরণ চক্রের সদস্য বলে স্বীকার করেছে। এ চক্রের সদস্যরা গত এক বছরে ৩৫/৪০ দস্যুতা ও অপহরন সংঘটিত করেছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা অস্ত্রের মুখে সাধারণ মানুষকে অপহরণ করে আটকে রেখে নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল। এই চক্রটি ফেইজ বুকের মাধ্যমে কখনো মেয়ে দিয়ে বন্ধুত্ব করে, সমকামী হওয়ার প্রস্তাব দিয়ে বিভিন্ন লোকজনকে ফুসলিয়ে অথবা রাস্তা থেকে ধরে গাড়িতে তুলে অজ্ঞান করে বনের মধ্যে বা গোপন আস্তানায় লুকিয়ে রেখে মারপিট করে মুক্তিপণের টাকা দাবি ও আদায় করতো। এছাড়া ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিভিন্ন সময় রাস্তায় গাড়ি আটকিয়ে দস্যুতা করে আসছিল তারা।