বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি বরগুনা কারাগার থেকে মুক্তি পান। এ সময় কারা ফটকে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোর, ভাই আবদুল মুহিত কাফি, তার আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম এবং অ্যাডভোকেট মোস্তফা কাদের উপস্থিত ছিলেন। এর আগে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে মিন্নির জামিনের আদেশের কপি বরগুনার আদালতে পৌঁছায় বলে নিশ্চিত করেন মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখন আমরা মিন্নির পক্ষে বেলবন্ড দাখিলের অনুরোধ করবো। আদালতের বিচারক বেলবন্ড গ্রহণ করে কারা কর্তৃপক্ষকে রিলিজ অর্ডার পাঠাবেন। আমরা আশা করছি, সকল দাপ্তরিক কাজ শেষ করে আজকের মধ্যেই মিন্নিকে মুক্ত করা সম্ভব হবে।’

গত বৃহস্পতিবার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় দুটি শর্তে মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। শর্ত দুটি হচ্ছে, মিন্নি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না এবং তাকে তার বাবার জিম্মায় থাকতে হবে। জামিনে থাকা অবস্থায় মিন্নি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললে তার জামিন বাতিল হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করেন হাইকোর্ট। পরে গত রোববার জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলেও মিন্নির জামিন আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

গত ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে দুর্বৃত্তরা রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। ওইদিন বিকেলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় প্রথমে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করা হয়। পরে এক আসামির স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের পর মিন্নিকে গত ১৬ জুলাই আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। ১৭ জুলাই তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানালে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পরে গত ৫ আগস্ট মিন্নির বাবা হাইকোর্টে মিন্নির জামিন চেয়ে আবেদন করেন। হাইকোর্ট গত ২০ আগস্ট মিন্নির জামিন প্রশ্নে রুল জারি করে ২৮ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে সিডিসহ হাজির হতে বলেন। সে অনুযায়ী ২৮ আগস্ট শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ২৯ আগস্ট মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেন।