সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি দেশের মানুষকে এতো ফ্লাইওভারের মুখ দেখাতে পারে নি। রাস্তা, সড়ক-মহাসড়কেরও মুখ দেখাতে পারেনি। দেশে আজ যে বাস র‌্যাপিড ট্র্যানজিট, এমআরটি লাইন, মেট্রোরেল, ফ্লাইওভারগুলো হচ্ছে, ফোরলেন হচ্ছে এগুলো তারা কোনদিন স্বপ্নেও দেখেনি। দেশে রাস্তা হবে, রাস্তা ফোরলেন হবে, সিক্সলেন হবে, সার্ভিসলেন হবে। টোল দিয়ে এসব রাস্তায় চলাচলে যে সুবিধাটুকু পাওয়া যাবে, তা জনগনই পাবে। যারা স্টেক হোন্ডার তারা পাবে।

মন্ত্রী মহাসড়কের টোল প্রসঙ্গে বলেন, পৃথিবীর যেসব দেশে এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন নতুন ফোরলেন, সিক্সলেন, এইটলেন সড়ক আছে- সেসব দেশে রাস্তায় টোলের ব্যবস্থা আছে। আপনি যে রাস্তাটা ব্যবহার করছেন সেই রাস্তাটা মেইনটেইন করতে হয়, সংস্কার করা দরকার হয়। এজন্য টাকা প্রয়োজন। কিন্তু এই টাকা আসবে কোথা থেকে? সরকার বারবার শুধু নতুন রাস্তা করবে। আর সেইসব রাস্তা যারা ব্যবহার করবে তাদের কোন দায়-দায়িত্ব থাকবেনা- এটা পৃথিবীর কোন দেশে নেই। বিএনপি তাদের সময়ে কোন রাস্তা করেনি বলেই তাদের সে অভিজ্ঞতা নেই। এ বিষয়ে অন্য দেশের অভিজ্ঞতা তাদের জানা থাকলেও বিএনপি চোখ থাকতেও অন্ধ হয়ে আছে।

তিনি মঙ্গলবার সকালে (সাড়ে ১১টার দিকে) গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গীতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলমান বাস র‌্যাপিড ট্র্যানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে এসে এ মন্তব্য করেন।

মন্ত্রী বলেন, বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রজেক্ট বাংলাদেশের জন্য একটা নতুন ও প্রথম প্রজেক্ট। এটা শেখ হাসিনা সরকারের একটা মেগা প্রজেক্ট। এ প্রজেক্টের আওতায় চেরাগআলী পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার ফ্লাইওভার হবে এলিভেটেট ফর্মে। টঙ্গীতে তুরাগ নদীর উপর ১০ লেনের ব্রীজ নির্মাণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে প্রশস্থ ব্রীজ হবে এ টঙ্গী ব্রীজ। আমরা আশা করছি ২০২১ সালের জুন নাগাদ এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে এবং যানবাহন চলাচল শুরু করবে। প্রকল্পের কাজ সমাপ্তের পর জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য ব্রীজ ও এলিভেটেড ফ্লাইওভার খুলে দেয়া হবে। এ প্রজেক্ট চলাকালে মানুষের সাময়িক কষ্ট, দূর্ভোগ ও যন্ত্রনা হচ্ছে। প্রজেক্টের কাজ শেষ হলে মানুষ স্বস্তি পাবে। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গে মানুষের যাতায়ত সহজ হবে এবং সময় বাঁচবে। যানজটের অসহনীয় বর্তমান অবস্থা তখন সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। যেসব দেশে বিআরটি প্রকল্প আছে, সেখানে এর সুফলটা কিভাবে পাচ্ছে, তাদের সেই অভিজ্ঞতা আমাদের জানা আছে। তাই এ প্রকল্পের গতি বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকেও এর মনিটরিং করা হচ্ছে।

মন্ত্রী রংপুরের উপ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহন প্রসঙ্গে বলেন, সরকার রংপুরে এরশাদ সাহেবের শূন্য আসনে একটি সুন্দর নির্বাচন চায়। এখানে একটা ভাল নির্বাচন হবে, অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কর্তৃত্বপূর্ণ ও স্বাধীন ভূমিকা পালনে আমরা নির্বাচন কমিশনকে সরকারেরর পক্ষ থেকে সব ধরণের সুযোগ ও সহযোগীতা দিব। নির্বাচনে যারা অংশ গ্রহণ করছে আমরা তাদের সবাইকে স্বাগত জানাই। বিএনপি অনেকগুলো নির্বাচন বর্জন করেছে, অংশ গ্রহণ করেনি। এখন তারা বলছে- স্থানীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত প্রত্যেকটি নির্বাচনে তারা অংশ গ্রহণ করবে। আমরা তাদের স্বাগত জানাই। তারা পার্লামেন্টে এসেছে, প্রসেডিংসে অংশ নিচ্ছে। পালামেন্টে তারা ডিবেট করছে। এটা একটি ভাল দিক। রংপুর উপ-নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আছে। আমরা আওয়ামীলীগ থেকে প্রার্থিতা দিয়েছি। বিএনপিও এখানে অংশ নিয়েছে। রংপুরের এ উপ-নির্বাচন প্রতিদ্বন্ধিতামূলক এবং সুষ্ঠু হবে।

এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ আনোয়ার হোসেন, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথের ঢাকা বিভাগীয় প্রকৌশলী সুবজ উদ্দিন খান, গাজীপুর সড়কও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাইফুদ্দিনসহ সড়ক ও জনপথের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তারা ঘুরে ঘুরে প্রকল্পের বিভিন্ন কাজ পরিদর্শণ করেন।