অস্ত্র ও মাদকের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা অস্ত্র মামলার ও হাকিম শাহিনুর রহমান মাদকের মামলার শুনানি নিয়ে এ রিমান্ডের আদেশ দেন।

রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবের অবৈধ ক্যাসিনোর মালিক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার শুনানির জন্য আজ সন্ধ্যায় তাকে আদালতে নেয় পুলিশ। পরে দুই মামলায় তার সাত দিন করে মোট ১৪ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন গুলশান থানার পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম।

বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘অস্ত্র ও মাদকের পৃথক দুই মামলায় তার সাত দিন করে মোট ১৪ দিনের রিমান্ড চেয়ে আমরা আদালতে আবেদন করেছি। পরে শুনানি শেষে মাদক মামলায় তিন দিন ও অস্ত্র মামলায় চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।’

জানা গেছে, রাজধানীর ৬০টি স্পটে এমন অবৈধ ক্যাসিনো (জুয়ার আসর) ব্যবসা চলছে। কেন্দ্রীয় ও মহানগর উত্তর-দক্ষিণ যুবলীগের এক শ্রেণির নেতা এ ব্যবসায় জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় যুবলীগ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন গণমাধ্যমের খবরের ভিত্তিতে জুয়ার আড্ডাগুলো সম্পর্কে প্রমাণসহ গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দেওয়া হয়। এতে চরম ক্ষুব্ধ হয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর এমন কঠোর অবস্থানের পরই গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলের ফকিরাপুল এলাকার ইয়ংমেনস ক্লাবের ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় সেখান থেকে ১৪২ জনকে আটক করা হয় এবং প্রায় ২৪ লাখ টাকা ও মাদক জব্দ করা হয়। অন্যদিকে একই সময়ে ওই ক্যাসিনোর মালিক যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে ধরতে তার গুলশানের ওই বাড়িতে ঘেরাও করে র‌্যাব। পরে প্রায় চার ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তাকে অস্ত্রসহ আটক করে র‌্যাব।

খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া রাজধানীর মতিঝিল, ফকিরেরপুল এলাকায় কমপক্ষে ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি ক্লাব নিজের লোকজন দিয়ে আর ফকিরেরপুল ইয়ংমেনস ক্লাবটি তিনি সরাসরি পরিচালনা করেন। এসব ক্লাবে প্রতিদিন ১০টা থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত চলে জুয়ার আসর। একই সঙ্গে চলে মাদক ব্যবসা।