বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইসিটি ও টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ক্যাম্পাস ইকোসিস্টেম প্ল্যান এবং ইন্টেলিজেন্ট হাইক্যাম্পাস সলিউশন চালু করেছে। এই সলিউশন চালুর মাধ্যমে আগামী তিন বছরের মধ্যে ২১০০ বিলিয়ন ইউয়ান আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল বৃহস্পতিবার চীনের সাংহাই ওয়ার্ল্ড এক্সপো এক্সিবিশন অ্যান্ড কনভেনশন সেন্টারে ‘হুয়াওয়ে কানেক্ট-২০১৯’ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন এ তথ্য জানানো হয়।

বিশ্বের ১৭০টি দেশে নানা সেবা দিচ্ছে হুয়াওয়ে। এন্টারপ্রাইজ খাতকে আরও বেশি প্রযুক্তিগত উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে হুয়াওয়ে। হুয়াওয়ে কানেক্ট ২০১৯ সম্মেলনে সারা বিশ্ব থেকে এক হাজারের বেশি গ্রাহক এবং সংশ্লিষ্টরা অংশ নিচ্ছেন। বিশ্বের ১৭০টি দেশে হুয়াওয়ে নানা সেবা দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি যৌথভাবে চীন ও এর বাইরে এন্টারপ্রাইজ গ্রাহকদের জন্য অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। আর সেই লক্ষ্যে হুয়াওয়ে এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ক্লাউড এবং কম্পিউটিং এর ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। চীনের বাইরে বিভিন্ন অংশীদারদের সঙ্গে এই সলিউশন নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। আর এই মাধ্যমে এন্টারপ্রাইজ গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সেবা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ইন্টেলিজেন্ট ক্যাম্পাস বিশেষজ্ঞদের মধ্যে রয়েছেন হুয়াওয়ে এন্টারপ্রাইজ বিজনেস গ্রুপের সভাপতি ইয়ান লিডা, সোচোউ ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট জিয়ং সিডং, বেইজিং মিউনিসিপ্যাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সেন্টার অব পার্কস-এর ভাইস ডিরেক্টর ঝাং ইয়াউং, চায়না ওভারসিজ প্রোপার্টি হোল্ডিংস লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও সিইও ড. ইয়াং উ, বেইমিং সফটওয়্যার কোম্পানি লিমিটেডের সিইও জিং ইয়ংশেং এবং হুয়াওয়ের ইন্টেলিজেন্ট ক্যাম্পাস বিজনেস বিভাগের প্রেসিডেন্ট ড. সু বাওহুয়া।

আইডিসি’র রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছর চীনের ইন্টেলিজেন্ট ক্যাম্পাস খাতের বাজার ২০০ বিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়ে যাবে। পরবর্তী চার বছর, যৌগিক বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হবে প্রায় ১৩ শতাংশ এবং ২০২২ সাল শেষে এটি প্রায় ৩০০ বিলিয়নে গিয়ে দাঁড়াবে। আর এ সময়ে বৈশ্বিক বাজার দাঁড়াবে চীনের তুলনায় সাত গুণ বেশি।

হুয়াওয়েই এন্টারপ্রাইজ বিজনেস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ইয়ান লিডা বলেন, ‘ক্যাম্পাস নির্মাণে আমাদের সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে আমরা ক্যাম্পাস পুনঃনির্ধারণ করছি এবং আমাদের’ প্ল্যাটফর্ম + ইকোসিস্টেম কৌশলের অনুসরণ করছি। হুয়াওয়েই হরাইজন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে, আমরা একটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রান্ত ডিভাইস সংযুক্ত করতে এবং অ্যাক্সেস পয়েন্ট চালু করার চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে গ্রাহকদের বিভিন্ন চাহিদা নিয়ে কাজ করছি। যেমন-শিল্প উন্নয়ন, নিরাপত্তা গ্যারান্টি, সরলীকৃত অভিজ্ঞতা এবং কর্মক্ষম দক্ষতা নিয়ে অর্থাৎ আপ-টু-ডেট। হুয়াওয়ের ৩০০ ইন্টেলিজেন্ট ক্যাম্পাস পার্টনার রয়েছে। ’

হুয়াওয়ে এন্টারপ্রাইজ বিজনেস গ্রুপের ইন্টেলিজেন্ট ক্যাম্পাস বিজনেস বিভাগের সভাপতি ড. সু বায়হুয়া জানান, হুয়াওয়ের ইন্টেলিজেন্ট ক্যাম্পাস ব্যবসায় ‘প্ল্যাটফর্ম ও ইকোসিস্টেম’ স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করে। ’ এ প্লাটফর্মে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), বিগ ডেটা ও ইন্টারনেট অব থিংসের (আইওটি) মতো ১০টি নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার হয়েছে। আর এটি থেকে গ্রাহকের চাহিদা বিবেচনায় শতাধিক সেবা পাওয়া যাবে।

এদিকে অন্য একটি সেশনে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, আগামী দিনগুলোয় সাইবার ঝুঁকি মোকাবেলায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বড় ভূমিকা পালন করবে।