লালমনিরহাটে এক প্রাইভেট মাষ্টার কর্তৃক সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত মাষ্টারকে গ্রেফতারের পর এবারে ধর্ষক প্রাইভেট মাষ্টারের সাথে বিয়ে পড়ানোর অপরাধে কাজী শহিদুল ইসলাম (৪৮)কে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ।

আজ শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোরে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। কাজী শহিদুল ইসলাম সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের বুড়িরবাজার সাতপাটকী এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলী ছেলে এবং তিনি ঐ ইউনিয়নের নিকাহ্ রেজিষ্টার পদে কর্মরত আছেন। জানা যায়, ১৯ সেপ্টেম্বর ভোরে জেলা সদরের পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের উমাপতি হর নারায়ন গ্রামের বাড়ি থেকে ধর্ষক শাহীন আলম (২১)কে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ। ধর্ষনের ঘটনায় পুর্বে পুলিশ র্ধর্ষন মামলা না নিয়ে এই ধর্ষকের সাথে গত ৭ আগষ্ট রাতে পুলিশের এসআই মইনুল ইসলাম মধ্যস্থতায় ধর্ষিতা শিশু শিক্ষার্থীর বিয়ে দেয়। এই বিয়ে রেজিষ্ট্রশন করানোর অপরাধে নিকাহ্ রেজিষ্টার কাজি শহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।

জানা যায়, প্রতিবেশী অচিমন বিবির বাড়িতে স্থানীয় কয়েক শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতেন একই ইউনিয়নের উমাপতি হরনারায়ণ গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে শাহিন আলম। সেখানে সপ্তম শ্রেণির ঐ মেয়েটিকেও মাসিক ৪০০ টাকা বেতনে পড়তে দেন তার ভ্যানচালক বাবা। কিছুদিন পড়ার পর শাহিন তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। সে রাজি না হলে শিক্ষক তার মোবাইল ফোনে আগে গোপনে তোলা কয়েকটি ছবি দেখিয়ে হুমকি দেন। শিক্ষক তাকে বলেন- যদি তার প্রস্তাব রাজি না হয়, তবে এসব ছবি এডিটিং করে খারাপ বানিয়ে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবেন। এই ভয় দেখিয়ে ৭ম শ্রেনির ওই ছাত্রীর সাথে প্রেম ও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করেন তিনি। কয়েক দিন পরে মেয়েটি অন্তঃস্বত্বা হয়ে পড়লে বাচ্চা নষ্ট করতে প্রাইভেট শিক্ষক শাহীন আলম টোটকা ওষুধ খাওয়ান। সেই ওষুধে গর্ভপাত হয়নি। ফলে গত ২৫ জুলাই ওই শিক্ষার্থীকে কৌশলে তুলে নিয়ে শহরের মেরী স্টোপ ক্লিনিকে অবৈধ গর্ভপাত ঘটান।

বিষয়টি জানাজানি হলে ইউপি চেয়ারম্যানের পরামর্শে মেয়েটির বাবা গত ১১ আগস্ট সদর থানায় একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই পুলিশের এসআই মাইনুল ইসলাম বাড়িতে এসে মেয়েটিকে বলেন- বিয়ে করবা নাকি জরিমানা নিবা। একপর্যায়ে এসআই বলেন, ৫০ হাজার টাকা দিলেই ছেলেপক্ষ বিয়েতে রাজি হবে। মেয়েটির বাবা জানান, নিরুপায় হয়ে এসআই মাইনুল ইসলামের প্রস্তাবে রাজি হয়ে সুদের ওপর ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ছেলেকে যৌতুক দিয়েছেন।

এ ব্যাপরে পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক জানান, নাবালিকা শিক্ষার্থীর সাথে ধর্ষক প্রাইভেট মাষ্টারের সাথে বিয়ে পড়ানোর অপরাধে কাজী শহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।