মরণব্যাধি ক্যান্সারকে অনেকটাই জয় করেছেন বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের জনপ্রিয় মুখ ও এক সময় জাতীয় দলের হয়ে খেলা মোশরারফ হোসেন রুবেল। ব্রেইনে ঘাতক যে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রোধ করা সম্ভব হয়েছে। পুরোপুরি নির্মুলে এখন চলছে কেমো ও রেডিও থেরাপি। যাতে করে অদূর ভবিষ্যতে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। ঘাতক ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী রুবেল এবার নামছেন মাঠের যুদ্ধে। যার শুরুটা হচ্ছে জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) দিয়ে।

৫ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া লঙ্গার ভার্সনের এই ক্রিকেটকে সামনে রেখে বেশ কয়েকদিন হলো অনুশীলন করছেন বাঁহাতি এই স্পিনার। সেই ধারাবাহিকতায় আজও এসেছিলেন মিরপুরে। মিরপুর জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির মাঠের নেটে তামিম ইকবালের বিপক্ষে বোলিং করেছেন। তার বোলিং দেখে একবারও মনে হয়নি এতবড় ঝড় তার জীবনে বয়ে গেছে। নিখুঁত লেংথ, ফ্লাইট ও টার্নে তামিমকে পরাস্ত করেছেন একাধিকবার।

অনুশীলন শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রুবেল জানালেন, জীবন যুদ্ধের মতো মাঠের যুদ্ধেও নিজেকে জয়ীর বেশে দেখতে চান। তবে কাজটি সহজ হবে না।রুবেল বলে চলেন, অবশ্যই এটি কঠিন হয়ে যাবে। যেহেতু আমার কেমো থেরাপি চলছে এখনও, শেষ হয়নি। ডাক্তার বলেছে এর মধ্যে আমি খেলতে পারবো। যে কয়দিন কেমো থেরাপি চলে ওই কয়দিন বাদ দিয়ে এক সপ্তাহ পর থেকে খেলতে পারবো। এরপর পরবর্তী মাসে কেমো থেরাপি শেষে ম্যাচ খেলতে পারবো। আমি অবশ্য এখন থেকেই অনুশীলন করছি। আগেও অনুশীলন করেছি। যুদ্ধ তো করতেই হবে। জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ, মাঠের সঙ্গে যুদ্ধ মানে দুই জায়গাতেই যুদ্ধ করতে হচ্ছে। আসলে কি আর করার আছে, এটা করতেই হবে। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি যতটুকু ফাইট করা যায়, সারভাইভ করা যায়। দোয়া করবেন আমার জন্য।

ক্রিকেটে পাড়ায় গুঞ্জন, জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) ২০১৯-২০২০ মৌসুমের জন্য নতুন নিয়ম করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড-বিসিবি। খেলতে হলে প্রতিটি ক্রিকেটারের ফিটনেস লেভেল থাকতে হবে আপ টু দ্য মার্ক। ফিটনেসের মান নির্নায়ক বিপ টেস্টে যারা ১১ নম্বর পাবেন না, তারা টুর্নামেন্টে খেলতে পারবেন না। ঘরোয়া ক্রিকেটকে প্রতিযোগিতামূলক করতে বিসিবির করা এমন নিয়মকে সাধুবাদ জানালেন এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার।

রুবেল জানান, আমি অবশ্যই বলবো যে আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের অবকাঠামো আরো প্রতিযোগিতামূলক করার জন্য এটি খুবই জরুরি ছিল। এবার যদি ঘরোয়া ক্রিকেটের অবকাঠামো শক্তিশালী না হয় তাহলে একটা খেলোয়াড় তো কখনো আন্তর্জাতিক লেভেলে মানিয়ে নিতে পারবে না। এই কারণে ঘরোয়া পর্যায় থেকেই সে যদি পারফর্ম করে আসে তাহলে সেই জায়গায় গিয়ে থিতু হতে পারে আরকি। এটার জন্য এমনটা জরুরি ছিল।

আমাদের জন্য ১৫ দিন বা এক মাসের জন্য কন্ডিশনিং ক্যাম্প হলে ভালো হতো। যদিও এখন সময় নেই। কন্ডিশনিং ক্যাম্প করার পরে… প্রত্যেকটা আলাদা আলাদা বিভাগ যদি এক মাস কন্ডিশনিং ক্যাম্প করে এবং এরপর যদি এই পরীক্ষাগুলো দেয় তাহলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হয়। যেহেতু এখন সময় নেই, আশা করি আগামী বছর থেকে এটা হবে। যোগ করেন রুবেল।