বরিশালের গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী ইউনিয়নের চাঁদশী গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান ও চাঁদশী ঈশ্বর চন্দ্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অদম্য মেধাবী সমাপ্তি হালদার ও একই উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বড়দুলালী গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান, সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অদম্য মেধাবী মো. বুলবুল হোসেন উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোর জন্য প্রথম আলো ট্রস্টের বৃত্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার তাদের হাতে বৃত্তির পেপারস তুলে দেন দৈনিক প্রথম আলোর গৌরনদী প্রতিনিধি, সিনিয়র সাংবাদিক জহুরুল ইসলাম জহির। উচ্চ মাধ্যমিক থেকে পরবর্তি উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত দুই অদম্য মেধাবীর শিক্ষার সকল ব্যায়ভারের দায়িত্ব নিলেন্য প্রথম আলো ট্রস্ট।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বন্ধুসভার সভাপতি পলাশ তালুকদার। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন গৌরনদী বন্ধুষভার প্রধান উপদেষ্টা ও প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম জহির। বিশেষ অতিথি ছিলেন বন্ধুসভার উপদেষ্টা চায়না দেবনাথ, ঝর্নাদাস লাবনী, রফিকুল ইসলাম সবুজ। এতে বক্তব্য রাখেন সাধারন সম্পাদক শ্রীকৃঞ্চ চক্রবর্তি, সদস্য সু-বন্যা আক্তার প্রমূখ। এ সময় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন শতাব্দীর মা, বুলবুলের মা আলেয়া বেগম।

চাঁদশী ঈশ্বর চন্দ্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অদম্য মেধাবী সমাপ্তি হালদার খেয়ে না খেয়ে শত বাধা উপেক্ষা করে নিজের ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এবারে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পান। তার সাফল্য জনক ফলাফলের আনন্দ ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার স্বপ্ন কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশোনার কথা ভাবতেই দুচোখের স্বপ্ন অন্ধকারে ঢেকে যায় । তার উচ্চ শিক্ষার পড়াশোনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরেন পরিবার। বাবা মা দুজনেই দিনমজুরের কাজ করে কোন রকম পরিবারের খরচ যোগান। শতাব্দির পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। বিসিএস ক্যাডার হয়ে প্রশাসনিক বিভাগে থেকে দেশের জন্য কাজ করতে চান শতাব্দী। শতাব্দীর স্বপ্ন পুরনের সুযোগ করে দিল প্রথম আলো ব্রাক ব্যাংক ট্রাষ্ট।

একইভাবে গৌরনদী বাষষ্টান্ডে একটি মোবাইলেরর দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ করার ফাকে পড়াশোনা করে গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পান মেধাবী মো. বুলবুল হোসেন। গৌরনদী বড়দুলালী গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান সে। বাবা দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ্য । ভিটে মাটি বিক্রি করে বাবা খলিলুর রহমানের চিকিৎসা করিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে পরিবারটি। মা আলেয়া বেগম বিভিন্ন বাসায় ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালায় । সময়ে পেলে টেইলারিং ফোরনে কাজ করে সংসার চালান। নিজের ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বুলবুল সাফল্য অর্জন করার পরে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন অনিশ্চি হয়ে পরে। তাকে নিয়ে প্রথম আলো পত্রিকার প্রথম পাতায় প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম জহিরের একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পরে সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সে চিকিৎসক হতে চায় । বুলবুলের স্বপ্ন পুরনে উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রথম আলো ট্রাষ্ট তার পড়াশোর দায়িত্ব নিলেন। অদম্য মেধাবী শতাব্দী ও বুলবুল জানান, তারা প্রথম অলোর কাছে কৃতজ্ঞ। তারা স্বপ্ন পুরন করে বাবা মার মুখে হাসি ফোটানোর পাশাপাসি পরিবার ও দেশের জন্য কাজ করতে চান।