শুধু আন্তর্জাতিক চাপ নয়, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বহুমাত্রিক চাপ দরকার। যেখানে দেশীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সব গোষ্ঠিরই ভূমিকা রাখতে হবে। চারপাশ থেকে যত চাপ আসবে মিয়ানমার তখন বাধ্য হবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে স্বীকৃতি দিয়ে ফিরিয়ে নিতে।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন’ শীর্ষক জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এসব কথা বলেন।

ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়টা এবার ছিলো জোনোসাইডাল ইনটেন্ড। যে মুহূর্তে একটা দেশ জেনোসাইড ঘটায় তখন সেটা আর দ্বিপাক্ষিক থাকে না, আপনা আপনিই আন্তর্জাতিক হয়ে যায়। মিয়ানমারে যদি শতভাগ লোকও ফিরিয়ে নেয় তারপরেও একদিন না একদিন এই জেনোসাইডের বিচার হতেই হবে। তা না হলে এই ধরনের জেনোসাইড বারবার ঘটতেই থাকবে। মিয়ানমারের জনগণই হয়তো একদিন এর বিচার করবে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমদ। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির মিয়ানমারের প্রতি রয়েছে আস্থা ও বিশ্বাসের সংকট। এই জনগোষ্ঠী বারবার মিয়ানমার কর্তৃক নির্যাতিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ আঞ্চলিক দেশগুলোকে নিয়ে যৌথ জোট গঠন করে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।

রোহিঙ্গারা যাতে স্বেচ্ছায় তাদের দেশে যেতে পারে মায়ানমারকে এই ধরনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। আর এর জন্য আন্তর্জাতিক গোষ্ঠিগুলির আরো সম্পৃক্ততার প্রয়োজন। কূটনীতিতে শেষকথা বলে কিছু নেই। আমাদেরকে ধৈর্য হারালে চলবে না। রোহিঙ্গা সমস্যা জিইয়ে রেখে কারও স্বার্থই সিদ্ধ হবে না। চীনকে এই বিষয়ে আরও বেশি বুঝতে হবে, বলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, সম্পূর্ণ মানবিক কারণে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে চোখে এখন সর্ষে ফুল দেখছে। রোহিঙ্গারা এখন আর তাদের দেশে ফিরে যেতে চায় না। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক কোন শক্তিধর রাষ্ট্রই তাদের জোরালো ভূমিকা রাখছেনা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, রাশিয়া, ভারত প্রত্যেকেই মিয়ানমারের সাথে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের হিসেব গুনছে।ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় লালমাটিয়া মহিলা কলেজকে পরাজিত করে ইডেন মহিলা কলেজ বিজয়ী হয়।