বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যার ঘটনার আলামত হিসেবে জব্দ হওয়া সিসিটিভি ফুটেজ শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিয়ে তারপর ছাড়া পেয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের দুই অতিরিক্ত কমিশনার। পূর্ণাঙ্গ সিসিটিভি ফুটেজের দাবিতে বুয়েট শিক্ষার্থীরা পুলিশের এই দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন শেরে বাংলা হল অফিসে।

সোমবার (৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই সিসিটিভি ফুটেজ হস্তান্তর করেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে হল অফিস থেকে বেরিয়ে যেতে দেন। ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে হল প্রাধ্যক্ষকেও অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের দাবি, ওই ভিডিও ফুটেজ তারা দেখতে চান। তারা আশঙ্কা করছেন, আলামত হিসেবে জব্দ হওয়া ভিডিও ফুটেজ বেহাত হয়ে গেলে আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছাত্রলীগের নেতারা পার পেয়ে যেতে পারেন।

এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায় আবরার হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় ৯ জনকে আটক করার তথ্য জানিয়ে শেরে বাংলা হলে শিক্ষার্থীদের সামনে ব্রিফিং করেন। এসময় আরেক অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেনও উপস্থিত ছিলেন।

প্রেস ব্রিফিং শেষ করে বের হতে চাইলে পুলিশের ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শেরে বাংলা হল অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা প্রটোকলের সদস্যরা ওই দুই কর্মকর্তাকে হল অফিস থেকে বের করে আনতে চাইলে তারাও শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন।

এসময় পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রটোকলে থাকা কয়েকশ পুলিশ সদস্য হুইসেল বাজিয়ে লাঠিচার্জ করে হল অফিস থেকে দুই অতিরিক্ত কমিশনারকে বের করে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশ সদস্যদের হলের বাইরে বের করে দেন।

রবিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা হলের একতলা থেকে দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝ থেকে আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা যায়, দিবাগত রাতে বুয়েটের শের-ই বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা।

এ ঘটনার সিসিটিভির সব ফুটেজ প্রকাশ করতে শিক্ষার্থীরা দাবি তোলেন। কিন্তু শের-ই বাংলা হল প্রশাসন ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করতে অনীহা দেখায়। তারা বলে, পুলিশ ভিডিও ফুটেজ নিয়ে গেছে। শেষপর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে সম্পূর্ণ ভিডিও দেয় প্রশাসন।