খাগড়াছড়ি জেলাধীন মহালছড়ির উপজেলার এক মাত্র স্টেডিয়ামটি অস্তিত্ব সংকটে। চলতি বছরে অতি মাত্রার ভারী বর্ষনে মাঠের উত্তর পাশে ধারক দেওয়াল ভেঙে বড় ধরনের ভাঙ্গন ধরেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় মাঠটির ভাঙ্গন এতটাই তীব্র যে,ধারক দেওয়াল ভেঙ্গে মাঠের ভিতরে গোল পোস্টের কাছাকাছি চলে এসেছে। আরেকটু ভাঙ্গলে উত্তর পাশের গোল পোস্টটাই থাকবে না। এছাড়া মাঠটির চারিদিকে পানি নিষ্কাশনের জন্য যে ড্রেনটি আছে সেটিও অসর্ম্পূণ, দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে কোনো ড্রেন র্নিমান করা হয়নি, যার ফলে পাহাড়ের পানি সরাসরি মাঠের মাঝখান দিয়ে বয়ে গিয়ে মাঠটি ক্ষতি করে। যে ড্রেনটি করা হয়েছে সেটিও এখন খেলোয়াড়দের মরনফাঁদে পরিনত হয়েছে, প্রায় সময় খেলোয়াড়েরা ড্রেনে পরে গিয়ে মারাত্বক ভাবে আঘাত প্রাপ্ত হচ্ছে। ড্রেনের উপর জুরুরী ভিত্তিতে স্লাব বসানো দরকার। মাঠটিও অসমতল হওয়ার ফলে খেলোয়াড়দের প্রায় সময় র্দূঘটানায় পরতে হচ্ছে।

কয়েকদিন আগে এই মাঠে হয়ে গেলো বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল র্টুনামেন্ট সহ আন্ত:স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। খেলোয়াড়েরা কতটা ঝুঁকি নিয়ে খেলায় অংশগ্রহণ করেছে তা মাঠটির র্বতমান অবস্থা দেখলেই বুঝা যায়। মাঠটির পূর্ব ও পশ্চিম দিকে রয়েছে দুটি স্কুল। ছাত্র-ছাত্রী তথা স্থানীয়দের খেলাধুলা করার জন্য এই মাঠটিই একমাত্র ভরসা। মাঠের এই করুণ অবস্থা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত কতৃপক্ষ কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেয়নি। যার ফলে ব্যহত হচ্ছে খেলাধুলা।

মহালছড়ি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মহালছড়ি সরকারী উ্চ্চ বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক সুইহ্লাঅং পিপলু রাখাইন বলেন মাঠটির চারিদিকে পানি নিষ্কাশনের ড্রেনটি অসম্পূর্ণ। মাঠটি অসমতল হওয়ার ফলে খেলোয়াড়দের প্রায় সময় দূর্ঘটনায় পরতে হয়। বিশেষ করে মাঠের পশ্চিম দিকে ড্রেনে স্লাব বসানো খুব জরুরী। দুটি গোল পোস্টের সংস্কার জরুরী বলেও তিনি বলেন।স্কুল ক্রীড়া, বিভিন্ন ধরনের বয়স ভিত্তিক প্রতিযোগিতা সহ জেলায় আয়োজিত টুর্ণামেন্টগুলোতে মহালছড়ি সব সময় ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে, কিন্তু মাঠ এই অবস্থায় থাকলে বর্তমান প্রজন্ম খেলাধুলায় অনেক পিছয়ে থাকবে। তিনি মাঠটি দ্রুত সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন, মহালছড়ি আর্দশ চাইল্ড স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন জনি বলেন মাঠটির এই অবস্থার ফলে ছাত্র-ছাত্রী ও নিয়মিত খেলোয়াড়দের খেলাধুলা ব্যহত হচ্ছে, তাছাড়া ভাঙ্গ জায়গায় যেকোনো সময় বড় দূর্ঘটনা হতে পারে। দ্রুত মাঠটি সংষ্কার করে খেলাধুলার উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রোকন মিয়া বলেন কয়েকদিন আগে যে খেলাগুলো হয়ে গেলো খুবই ঝুঁকি নিয়ে খেলাগুলো পরিচালনা করতে হয়েছে। মাঠটি দ্রুত সংষ্কার করা দরকার। মাঠটি সংষ্কার হচ্ছে না বিধায় কোনো খেলারও আয়োজন করা যাচ্ছে না। মাঠটি সংষ্কার করার জন্য তিনি খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সদস্য জুয়েল চাকমাকে অবহিত করেছেন বলে জানান। খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চাকমার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে, এই জন্য সরকার কাজ করতেছে বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন মহালছড়ির বর্তমান স্টেডিয়ামটির অবস্থা সম্পর্কে তিনি অবগত রয়েছেন। এই মুহূর্তে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে কোনো বাজেট দেয়া সম্ভব নয় বলে তিনি জানান। মাঠটি সংষ্কার করার জন্য তিনি উপজেলা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।

মহালছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী জহির মেহেদী হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মাঠ রর্ক্ষাথে ধারক দেয়াল নির্মাণের জন্য এডিবি থেকে একটি দুই লক্ষ টাকার প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হচ্ছে। তবে যেখানে ভেঙ্গে গেছে সেখানে মাটি ভরাট করার জন্য কোনো বরাদ্ধ পাওয়া যায়নি।

কলিন চাকমা,(খাগড়াছড়ি) মহালছড়ি প্রতিনিধি