বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড বিমল বিশ্বাস পার্টির মূল নেতৃত্বের বিচ্যুতির কারণে পার্টির প্রাথমিক সদস্যপদ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের সঙ্গেও কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাদের কাছে চিঠি দিয়ে তিনি তার প্রাথমিক সদস্যপদ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে তিনি উল্লেখ করেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি মূল নেতৃত্বের বিচ্যুতির বিরুদ্ধে পার্টির অভ্যন্তরে কথা বলেছেন। ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল এবং ২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল পলিটব্যুরোর সভায় তিনি অব্যাহতি চেয়েছিলেন। আসন্ন পার্টিকংগ্রেসকে কেন্দ্র করে প্রকাশিত ফোরামে নির্ধারিত শব্দসীমার মধ্যে তিনি তার বক্তব্য উল্লেখ করেছেন।

বিমল বিশ্বাস তার সদস্যপদ প্রত্যাহারপত্রে উল্লেখ করেছেন, ‘বর্তমানে ওয়ার্কার্স পার্টির মূল নেতৃত্ব মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদের কথা বলেন, কিন্তু কাজ করেন আদর্শের বিরুদ্ধে।’

চিঠিতে বিমল বলেন, ‘কৌশলের নামে নীতিকে জলাঞ্জলি দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাথে কৌশলগত যে ঐক্য, তাকে কাজে লাগানো হয়েছে এমপি ও মন্ত্রী হবার জন্য। লুটেরা ধনিক শ্রেণির যেকোনো দলই হোক না কেন, সমাজ বিপ্লবকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে শোষক শ্রেণি ও তাদের রাষ্ট্রযন্ত্রকে রক্ষার ক্ষেত্রে মূলগতভাবেই শত্রু। শোষক শ্রেণি ও তার রাষ্ট্র ব্যবস্থা শক্তিশালী হয় এমন যেকোনো কৌশল বুর্জোয়া লেজুড়বৃত্তি কৌশল এবং লুটেরা ধনিক শ্রেণিকে শক্তিশালী করার কৌশল!’

চিঠিতে কমরেড বিমল বিশ্বাস উল্লেখ করেন, ‘ওয়ার্কার্স পার্টির গঠনতন্ত্রে বর্ণিত সদস্যপদের ধারাগুলোকে পদদলিত করে এবার ঢাকা, বরিশাল, রাজশাহী জেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় সদস্য বৃদ্ধির নামে যাকে তাকে সদস্যপদ দিয়ে পার্টির শক্তি বৃদ্ধি দেখানো হচ্ছে। পার্টি ও শ্রেণি গণসংগঠনের আন্তঃসম্পর্ক, ফান্ড পলিসি, ক্যাডার পলিসিসহ অনেক ব্যাপারেই মতপার্থক্য রয়েছে।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘অগণতান্ত্রিক পথেই পার্টি পরিচালিত হচ্ছে। তার সাথে যে আদর্শিক, রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক পার্থক্য তা দূরিভূত হবার নয়। তাই তিনি পার্টির প্রাথমিক সস্যপদ প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন।’ চিঠিতে কমরেড বিমল বিশ্বাস শ্রমজীবী মানুষের শ্রেণি সংগ্রামের ভিত্তিতে কমিউনিস্ট ঐক্য ও বাম ঐক্য গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।