খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলার মুবাছড়ি বন বিহারে আজ ২৫ অক্টোবর ১ম বারের মত জাকজমকের মধ্যে দিয়ে শুভ দানোত্তম কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগের দিন ২৪ অক্টোবর ২৪ ঘন্টার মধ্যে কঠিন চীবর বুনন অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন যোগাসিদ্ধি মহাস্থবীর।
মুবাছড়ি বন বিহারের প্রধান উপদেষ্টা চপলা খীসার পৃষ্ঠপোষকটায় এই কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
আজ সকাল ৯ টায় ইকো চাকমা ও বর্ষা চাকমার সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানের প্রথমে শিল্পী আদর্শী চাকমা ও সুনীল তঞ্চংগ্যার সহযোগিতায় উদ্বোধনী সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর ত্রিশরণ সহ পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন রিতেস চাকমা, পঞ্চশীল প্রদান করেন যোগাসিদ্ধি মহাস্থবীর।
সারাদিন ব্যাপি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য বুদ্ধ মূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, হাজার প্রদীপ দান, কঠিন চীবর দান, কল্পতুরু দান, আকাশ প্রদীপ দান সহ বিবিধ দান করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গামারীঢালা বন বিহারের বিহার অধ্যক্ষ বোধিপাল মহাস্থবীর, খেদারমারা বনবিহারে অধ্যক্ষ যোগাসিদ্ধি মহাস্থবীর, পানছড়ি শান্তিপুর অরণ্য কুঠিরের বিহার অধ্যক্ষ শাসন রক্ষিত মহাস্থবীর সহ বিভিন্ন বিহারের ভিক্ষু সংঘ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, মহালছড়ি জোন অধিনায়ক লে: কর্ণেল মেহেদি হাসান, মহালছড়ি ইউএনও প্রিয়াংকা দত্ত, জেলা পরিষদের সদস্য জুয়েল চাকমা, উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কান্তি চাকমা, মহালছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান রতন কুমার শীল, মুবাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান বাপ্পি খীসা সহ বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার দায়ক দায়িকা বৃন্দ। উপস্থিত ভিক্ষু সংঘ ও অতিথিদেরকে ফুলের তোড়া ও ক্রেস্ট দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন অত্র বিহারের সভাপতি জ্ঞান চাকমা। এছাড়াও সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী।
উক্ত অনুষ্ঠানে পূর্ণ্যাথীদের উদ্দেশ্য স্বধর্ম দেশনা প্রদান করেন সুমন মহাস্থবীর, যোগাসিদ্ধি মহাস্থবীর, বোধিপাল মহাস্থবীর, ও শাসন রক্ষিত মহাস্থবীর। ভিক্ষুরা ধর্ম দেশনায় সবাইকে হিংসা নিন্দা ত্যাগ করে শীল পালন করতে এবং ধর্মীয় রিতিনীতি মেনে চলার আহবান জানান।
কংজরী চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন দেশকে উন্নতির শিখরে পৌছে দিতে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার বদ্ধপরিকর। ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত দেশে পরিনত করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। তিনি আরো বলেন সবাইকে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা উচিত, বিশেষ করে ছেলেমেয়েদের চরিত্র গঠনের জন্য ধর্মীয় জ্ঞান থাকা খুবই দরকার। তিনি বিহার কমিটিকে বলেন লিখিত আবেদন করলে আগামী অর্থ বাজেটে বিহারে উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্ধ দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
এছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পরিষদ মহালছড়ি কতৃক বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং পার্বত্য ত্রান ফাউন্ডেশনের আয়োজনে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও সেচ্ছায় রক্তদানে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।

কলিন চাকমা,( খাগড়াছড়ি) মহালছড়ি প্রতিনিধি