মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বিএনপি সরকারের আমলে বেগম খালেদা জিয়া যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন তার ছেলে তারেক জিয়া হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে। সেখানে বসে তারেক জিয়া দেশরতœ শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করে পাকিস্তান থেকে গ্রেনেড এনে সাপ্লøাই দিয়েছিল। খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন তিনি দুই হাতে বাংলার সম্পদ হরিলুট করে বিদেশে পাচার করেছেন। আদালতের রায়ে তারেক জিয়ার জেল হয়েছে, টাকা পাচারের অভিযোগে বিদেশে নির্বাসিত হয়েছে।

শনিবার দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষ্যে শ্রীপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, আমরা দুর্নীতি বন্ধ করতে চাই, সরকার দুর্নীতি বন্ধ করতে চায়। দুর্নীতি বন্ধ করতে আমরা আমাদের ঘর থেকেই অভিযান শুরু করেছি। ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে আমরা ছাড় দেই নাই। আমাদের প্রিয় নেতা শেখ ফজলুল হক মনি যে যুবলীগ গঠন করেছিলেন, দুর্নীতির কারণে সেই যুবলীগের কোন নেতাই রেহাই পায় নাই। আমাদের আরেক প্রিয় সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রেসিডিয়াম সেক্রেটারীসহ কেউই ছাড় পায় নাই।

তিনি দুর্নীতির বিষয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, শেখ হাসিনা কোন দুর্নীতি ও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন নি, দিবেনও না। শেখ হাসিনা দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এর আগে নিজের লোকদের শায়েস্তা করার মধ্য দিয়ে তিনি এ কাজ শুরু করেছেন। পর্যায়ক্রমে অন্যদেরও ধরা হবে। এই দেশ লুটের রাজত্ব নয়, জনগণের সম্পদ কেউ লুট করবে, আর সরকার নাকে তেল দিয়ে ঘুমাবে সেই সরকার শেখ হাসিনা সরকার নয়। সেই ম্যাসেজ আমরা জাতিকে জানিয়ে দিচ্ছি।

আওয়ামীলীগের স্মৃতিচারণ করে মন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৪৯সালের ২৩জুন এই আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। মানুষ তখন আল্লাহর বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পেত, কিন্তু মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস ছিল না। সেই সময় সেই দিনের নেতারা আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তখন জেলখানায় থেকেই আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন, তাজ উদ্দিন আহম্মেদ ছিলেন সদস্য। পাকিস্তানে ২৩বছরের মধ্যে আওয়ামীলীগ ২১বছর ছিল বিরোধীদল। ওই সময় টুকুতে বাঙ্গালীরা অধিকার নিয়ে আন্দোলন করেছে, সংগ্রাম করেছে। বছরের পর বছর কারাগারে তারা আটক ছিলেন।

তিনি বলেন, ৭০এর নির্বাচনে বাংলার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুকে আওয়ামীলীগের নৌকা মার্কায় ভোট দেয়। তারপরও পাকিস্তানীরা ক্ষমতায় দেয় নাই। এরপর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে জীবন বাজি রেখে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে খুনি মোস্তাক ও খুনি জিয়া রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে নেয়। তারপর প্রায় ত্রিশ বছর জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া, সেনাবাহিনী, আধাসেনাবাহিনী, এই সরকার, সেই সরকার দ্বারা এই দেশ শাসন করেছে। আর আওয়ামীলীগের বঙ্গবন্ধুর আমলে শেষ দুই বছর আমাদের মহান নেত্রী সফল রাষ্ট্র নায়ক দেশরতœ শেখ হাসিনা সাড়ে তিন বছর বাংলার মানুষের সেবা করার সুযোগ পেয়েছেন। তাদের ত্রিশ বছরে কি হয়েছে আর আওয়ামীলীগের ১৯ বছরে কি হয়েছে তা তুলনা করলে আকাশ পাতাল ব্যবধান হবে। আজকে সারা বাংলাদেশে একই চিত্র। এখন মানুষের পেটে ভাত আছে, বিদ্যুত আছে, মানুষের কাছে অর্থ আছে।

শ্রীপুর পৌর মেয়র ও গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে ও হুমায়ুন কবির হিমুর পরিচালনায় শ্রীপুর পৌর আওয়ামীলীগের আওয়াীলীগের সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শামসুল আলম প্রধান, ভাইস চেয়ারম্যান মাহতাব উদ্দিন, অ্যাডভোকেট হারিছ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক চেয়ারম্যান আমির হামজা, কফিল উদ্দিন মন্ডল প্রমুখ।