রাজধানীর রূপনগর আবাসিক এলাকায় বেলুন ফোলানোর একটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে পাঁচ শিশু নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও কয়েকজন। আজ বুধবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে রূপনগরের ১১ নম্বর রোডে এ বিস্ফোরণ ঘটে। ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ডিউটি অফিসার রাসেল সিকদার আমাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, হতাহতদের উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। এ ঘটনায় নিহতরা হলো, রমজান (৮), নুপুর (৭), শাহীন (৯) ও ফারজানা (৬)। নিহত আরেকজনের নাম এখনো পাওয়া যায়নি।

বিস্ফোরণে আহত হয় জান্নাত (২৫), জুবায়ের (৮), সাদেকুর (১০), নাহিদ (৭), জামিল (১৪), আরিয়ানসহ (৯) কয়েকজন। রূপনগর থানা সূত্রে জানা যায়, আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালসহ বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। তবে আহতদের সঠিক পরিসংখ্যান এখনো বলা যাচ্ছে না।

আজ বুধবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সাইফুল ইসলাম নামের এক বেলুন বিক্রেতার ওই গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অন্তত পাঁচজন মারা গেছে। বেলুনে গ্যাস ভরানোর সময় এ ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। এ ছাড়া আরও কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রূপনগরের ১১ নম্বর রোডের বাসিন্দা মো. মোস্তফা মিয়া বলছিলেন, বিস্ফোরণের সময় তিনি নিজের বাসার নিচেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। তার প্রায় ৫০ গজ দূরেই ওই বিস্ফোরণ হয়। তিনি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ছুটে যান। গিয়ে দেখেন, অনেকের ছিন্নভিন্ন দেহ সেখানে পড়ে আছে।

মো. মোস্তফা মিয়া বলেন, ‘বেলুন বিক্রেতা সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন ‘রঙিলা আর্ট’ নামের দোকানের সামনে বেলুন বিক্রি করতে আসতেন। আজ বেলা সাড়ে ৩টার দিকে আগের মতোই ভ্যান দাঁড় করিয়ে একের পর এক বেলুন ফোলাচ্ছিলেন।তিনি। সেটা দেখে কয়েকজন শিশু তার পাশে দাঁড়ায়। এ সময় সন্তানকে বেলুন কিনে দিতে সেখানে যান এক নারী। কিছুক্ষণ পরেই সেই বিস্ফোরণ ঘটে।’

ওই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মিন্টু মিয়া জানান, ঘটনার সময় পাশের একটি টিনশেট ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন তিনি। বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনে প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন, বোধহয় বিদ্যুতের ট্রান্সমিটার বিস্ফোরণ হয়েছে। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মানুষের চিৎকার শুনে তিনি ঘর থেকে বের হন। ঘটনাস্থলে এসে দেখেন, বেলুন বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম, একজন নারী ও কয়েকজন শিশুর দেহ সেখানে পড়ে আছে। তাৎক্ষণিত তারা থানা ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়।

মিন্টু মিয়া আরও জানান, খবর পেয়ে বিস্ফোরণের ১০ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে আসে পাশেই অবস্থা করা কয়েকজন পুলিশ সদস্য। তার ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে চলে আসে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। পরে অন্তত ১৩ জন হতাহতের দেহ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে তুলতে সহায়তা করেন তিনি।