খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়িতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাসেবা জনসাধারণের দোড়গড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পরিষদ মহালছড়ি। বর্তমানে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মান ও ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও এলোপ্যাথি চিকিৎসার তুলনায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান কম।
জনসাধারণের মাঝে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সেবা ও সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নিয়ে গত ২৮ মে ২০১৭ইং তারিখে মহালছড়ি শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের আত্মপ্রকাশ ঘটে।

ডা: প্রকৃতি রঞ্জন দাশ গুপ্তকে সভাপতি, ডা: সুকৃতি চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক, ডা: বিমল চন্দ্র তালুদার (সহ সভাপতি), ডা: নিহার চাকমা (সহ সভাপতি), ডা: সবিনয় চাকমা (সহ সম্পাদক), ডা: প্রীতি রাণী দাশ(মহিলা বিষয়ক সম্পাদক), ডা: ভবতোষ দেওয়ান (প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক), ডা: সাধনা চাকমা (চিকিৎসা বিষয়ক সম্পাদক), ডা: অনিল চাকমা (দপ্তর সম্পাদক), প্রসিত বিকাশ খীসা (ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক) ও ডা: রিপাইন চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে উক্ত কমিটি গঠন করা হয়। হোমিও চিকিৎসা শাস্ত্রকে ব্যাপক প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্য নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদ স্বল্প মূল্য ও বিনা মূল্যে চিকিৎসা সেবা সহ বিভিন্ন প্রোগ্রাম পরিচালনা করে আসতেছে।

সর্বশেষ গত ২৫ অক্টোবর মহালছড়ির মুবাছড়ি বন বিহারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে প্রায় ৩ শতাধিক রোগীকে বিনা মূল্যে চিকিৎসা ও ঔষধ বিতরণ করা হয়। খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী ও জেলা পরিষদের অন্যতম সদস্য জুয়েল চাকমা এই কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

মহালছড়ি স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের সভাপতি ডা: প্রকৃতি রঞ্জন দাশ গুপ্ত বলেন সংগঠনটি গঠিত হওয়ার পর থেকে আজ অবদি অনেক গরিব ও অসহায় রোগীকে বিনা মূল্যে চিকিৎসা ও সেবা দিয়ে আসতেছে এই সংগঠনটি। তিনি আরো বলেন জন সাধারনের মাঝে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার সঠিক তথ্য ও সঠিক চিকিৎসা সেবা পৌছে দেওয়াই এই সংগঠনটির মূল উদ্দেশ্য। ভবিষ্যতেও সংগঠনটির পক্ষ থেকে বিনা মূল্যে চিকিৎসা সেবা সহ জনকল্যানমুলক প্রোগ্রামের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য যে জার্মান চিকিৎসক স্যামুয়েল হ্যানিমেন উদ্ভাবিত (১৭৯৬) এক চিকিৎসা পদ্ধতি। এই চিকিৎসা পদ্ধতির অন্তর্নিহিত মূলনীতি হচ্ছে- কোনো একজন সুস্থ্ ব্যক্তির উপর যে ঔষধ প্রয়োগ করলে তার মধ্যে অসুখের লক্ষণ দেখা দেয়, ঐ একই ঔষধ সেই অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তির উপরে প্রয়োগ করলে তা অসুস্থ ব্যক্তির জন্য অসুখের লক্ষণ নিরাময়ের কাজ করে। হ্যানিম্যানের প্রস্তাবিত এই তত্ত্বের উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থা। হোমিওপ্যাথিক ঔষধ অন্যান্য ওষধের তুলনায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম। বর্তমানে চিকিৎসা শাস্ত্রের অন্যতম একটি ক্ষেত্র হোমিও চিকিৎসা। ভারত ও বাংলাদেশে বহুকাল থেকেই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা চলছে। বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন জায়গায় আনুষ্ঠানিক শিক্ষাদানের জন্য কয়েকটি হোমিওপ্যাথি কলেজ ও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

কলিন চাকমা, (খাগড়াছড়ি) মহালছড়ি প্রতিনিধি