বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এর প্রভাবে চট্টগ্রাম বন্দরে ৬ নম্বর সতর্কসংকেত জারি করা হয়েছে। এদিকে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর সতর্কসংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শুক্রবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. আবুল কালাম মল্লিক এ সতর্কতা জারি করেন। এর আগে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছিল।
প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্ট উষ্ণমণ্ডলীয় ঝড় মাতমো গত অক্টোবরের শেষে ভিয়েতনাম হয়ে স্থলভাগে উঠে আসে। সেই ঘূর্ণিবায়ুর অবশিষ্টাংশই ইন্দোনেশিয়া পেরিয়ে ভারত মহাসাগরে এসে আবার নিম্নচাপের রূপ নেয়। বারবার দিক বদল করে নিম্নচাপটি আবার শক্তিশালী হয়ে ওঠে। পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে এসে বুধবার রাতে তা ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়। তখন এর নাম দেয়া হয় ‘বুলবুল’।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ ক্রমেই শক্তি সঞ্চার করে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। শুরুর দিকে ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ৮০-৯০ কিলোমিটার। শুক্রবার দুপুর থেকে এটির শক্তি ক্রমশই বাড়তে থাকে। ‘বুলবুল’ ইতোমধ্যে দ্বিতীয় ক্যাটাগরির ঘূর্ণিঝড়ে উন্নীত হয়েছে। এটি এখন আঘাত হানলে ১৩০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইবে। যে বাতাসে ঘরবাড়ি উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে। অপরদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’মোকাবিলায় চট্টগ্রামে ৪৭৯টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া আশ্রয় নেওয়া দুর্গত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত শুকনো খাবার মজুদ রাখা হয়েছে।

শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসন আয়োজিত জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন জানান, সন্দ্বীপ, বাঁশখালী, আনোয়ারা, সীতাকুণ্ড উপকূলীয় এলাকা থেকে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে। এদিকে, সংকেত ছয় দেয়ার পর চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জনসহ বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসার জন্য। এছাড়াও সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে ২৮৪টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। অপরদিকে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এর কারণে অভ্যন্তরীণ নৌপথে নৌ-চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিএ।