টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) দাবি করা পাওনা ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার মধ্যে ২০০ কোটি টাকা শর্তসাপেক্ষে দিতে রাজি হয়েছে মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন। অন্যদিকে, প্রায় সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা পাওনার ৫০ ভাগ গ্রামীণফোনকে জমা দেওয়ার প্রস্তাব করেছে বিটিআরসি। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগে গ্রামীণফোন ও বিটিআরসির আইনজীবীদের বক্তব্যে এসব প্রস্তাব এসেছে। শুনানি নিয়ে আদালত আগামী সোমবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন।

গত ৩১ অক্টোবর আদালত বিটিআরসির নিরীক্ষা দাবির প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার মধ্যে গ্রামীণফোন এখন কত টাকা দিতে পারবে, তা জানতে চেয়েছিলেন। একই সঙ্গে গ্রামীণফোনের আইনজীবীদের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ নভেম্বর (আজ) পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ আপিল বিভাগে শুনানি হয়।

আদালতে গ্রামীণফোনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শেখ ফজলে নূর তাপস। গ্রামীণফোনের পক্ষ ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও মো. মেহেদি হাসান চৌধুরী। বিটিআরসির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।

শুনানিতে গ্রামীণ ফোনের আইনজীবী শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, অর্থমন্ত্রীসহ দুই মন্ত্রীর উপস্থিতিতে প্রতিনিধিদের নিয়ে গত ৩ অক্টোবরের বৈঠকে ২০০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। শর্ত ছিল—গ্রামীণ ফোনের ওপর বিটিআরসির আরোপ করা প্রতিবন্ধকতাগুলো তুলে দেওয়ার। এই প্রস্তাব অনুসারে দুই কিস্তিতে গ্রামীণ ফোন ওই টাকা বিটিআরসিকে দিতে সম্মত হয়। শুনানিতে মাহবুবে আলম বলেন, অন্তত পাওনার ৫০ ভাগ অর্থ গ্রামীণফোন জমা দিক। তারপর কমিটির মাধ্যমে বাকি অর্থ পরিশোধের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

মাহবুবে আলম হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতের আরজি জানান। এ সময় আদালত বলেন, নমনীয় দৃষ্টিতে দেখতে হবে। বিটিআরসির পাওনা দাবি নিয়ে গ্রামীণফোন নিম্ন আদালতে একটি মামলা করে। পাওনা দাবির অর্থ আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চায় গ্রামীণফোন। এই নিষেধাজ্ঞার আবেদন নামঞ্জুর হলে তারা হাইকোর্টে আপিল করে।

এর আগে গত ১৭ অক্টোবর আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে ওই অর্থ দাবি আদায়ের ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে বিটিআরসি আবেদন করে, যা চেম্বার বিচারপতির আদালত হয়ে আপিল বিভাগে শুনানির জন্য আসে।