হংকংয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে চলছে সংঘর্ষ। রোববার (১৮ নভেম্বর) দিনগত রাত থেকে থেমে থেমে হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সংঘর্ষ চলছে।

এরই মধ্যে বিক্ষোভকারীদের দেয়া বেরিকেড গুঁড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। ধর-পাকড়ও চালাচ্ছে পুলিশ। এ সহিসংতায় প্রায় ৪০ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।সোমবার ভোরে দাঙ্গা পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর ঘিরে রাখে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের অনেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও সফল হতে পারেননি পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের কারণে। বিশ্ববিদ্যালয়টির আশপাশের এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়েছে সংহিসতা।

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকশ’ শিক্ষার্থী আটকা পড়েছেন। এরই মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী আটক হয়েছেন বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

পুলিশের লাঠি চার্জ, জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের জবাব শিক্ষার্থীরা দিচ্ছেন ইট-পাটকেল মেরে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ পেট্রোল বোমাও ছুড়ছেন পুলিশ সদস্যদের দিকে।

বিক্ষোভকারীদের ছোড়া তীরের আঘাতে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পর পুলিশ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, বিক্ষোভকারীরা অস্ত্র ব্যবহার করলে, পুলিশ তার কড়া জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে। আহত ওই পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে দেখতে যান হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি সহিংসতার জন্য দাঙ্গাকারীদের নিন্দা ও বিক্ষোভকারীদের পুলিশি নির্দেশ মানার আহ্বান জানান।এদিকে এ সহিংসতার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে সব পক্ষকে সহিংস পথ ছেড়ে গঠনমূলক সংলাপ করার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।

গত জুন থেকে হংকংবাসী আন্দোলন করে আসছেন। তাদের এ আন্দোলন মূলত রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ করার অভিযোগে অভিযুক্ত বা অপরাধী প্রত্যর্পণের এক সিদ্ধান্ত নিয়ে। চীন সরকার চায়, হংকংয়ে যারা রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে অভিযুক্ত হবে, তাদের মূল চীনে (মেইনল্যান্ড চীন) পাঠিয়ে দিতে। চীনের এ সিদ্ধান্ত হংকংয়ের বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতার প্রতি হস্তক্ষেপ ও ভিন্ন মতাবলম্বীদের দমন করার চেষ্টা বলে মনে করেন হংকংবাসী।

হংকংবাসীর তুমুল বিরোধিতার মুখে কর্তৃপক্ষ অপরাধী প্রত্যর্পণ বিলটি গত সেপ্টেম্বরে প্রত্যাহার করে। তবে আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। আন্দোলনকারীরা এখন হংকংয়ে পুরোপুরি গণতন্ত্র দাবি করছেন। আন্দোলনে পুলিশের হামলার তদন্তও চেয়েছেন তারা।১৯৯৭ সালের আগ পর্যন্ত হংকং ব্রিটেনের উপনিবেশ ছিল। এক দেশ, দুই নীতি ব্যবস্থার মাধ্যমে চুক্তির ভিত্তিতে হংকংকে চীনের কাছে দেয় ব্রিটেন। সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশটি মূল চীন থেকে আলাদাভাবে শাসিত। চুক্তি অনুয়ায়ী, হংকং স্বায়ত্তশাসিত ও অধিবাসীরা মূল চীনের জনগণের চেয়ে বেশি অধিকার ভোগ করেন ।