যুক্তরাজ্যের মধ্য লন্ডনে গতকাল শুক্রবার রাতে এক সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত দুইজন নিহত এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। লন্ডন ব্রিজের উত্তরের অংশে একটি হলে চলতে থাকা এক অনুষ্ঠানে হামলার সূত্রপাত হয়।

ছুরি নিয়ে কয়েকজন ব্যক্তির ওপর হামলার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই জনগণের সহায়তায় এবং পুলিশের গুলিতে সন্দেহভাজন হামলাকারী নিহত হন। ছুরিকাঘাতে একজন পুরুষ ও একজন নারী নিহত হয়েছেন, তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এই ঘটনায় আরও তিনজন আহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তি ভুয়া বিস্ফোরকের ডিভাইস পড়েছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ নিশ্চিত করেছে তার নাম উসমান খান এবং তার বয়স ছিল ২৮। হামলাকারী সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে এর আগে কারাদণ্ড ভোগ করেছিলেন। পুলিশ তার গতিবিধির ওপর নজর রাখবে এমন শর্তে এক বছর আগে তিনি জেল থেকে ছাড়া পান। খবর বিবিসি’র। নভেম্বরের শুরুতে যুক্তরাজ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কার মাত্রা কমিয়ে দেয়ার এক মাসের মধ্যে এই হামলার ঘটনা ঘটলো।

কে এই হামলাকারী?

পুলিশ জানিয়েছে, উসমান খান নামের এ ব্যক্তিকে ২০১২ সালে সন্ত্রাসের দায়ে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল।
যুক্তরাজ্যের কাউন্টার টেরোরিজম পুলিশের প্রধান নেইল বসু বলেন, ‘২০১৮ সালের ডিসেম্বরে তিনি কারাগার থেকে এই শর্তে ছাড়া পান যে, তার গতিবিধির ওপর পুলিশ নজর রাখবে। কীভাবে তিনি এই হামলা চালালেন, তা নিয়ে এখন তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’ স্ট্যাফোর্ডশায়ারে যেখানে উসমান থাকতেন সেখানে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। তার শরীরে একটি ইলেকট্রনিক ট্যাগ লাগানো থাকবে, যার মাধ্যমে তার গতিবিধি নজরদারিতে রাখা হবে এমন শর্তে এক বছর আগে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর আগে ২০১৭ সালের ৪ জুন লন্ডন ব্রিজ ও বারো মার্কেটে হামলা করা হয়েছিল, যাতে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছিলেন।

যেভাবে হামলা ঘটে

শুক্রবার লন্ডনের স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৫৮ মিনিটে লন্ডন ব্রিজের উত্তর অংশে, ফিশমোনগারস হলে হামলার ঘটনাটি ঘটে। এ সময় ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে বন্দীদের পুনর্বাসন সংক্রান্ত একটি সম্মেলন চলছিল। সন্দেহভাজন ঐ ব্যক্তিও অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।

ছাত্র ও সাবেক কারাবন্দীসহ অনেক মানুষ সেমিনারে অংশ নিয়েছিলেন। সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ব্রিজের একপাশে কয়েকজন পথচারী মিলে এক ব্যক্তিকে মাটিতে ফেলে দিতে দেখা যায়। একজন পুলিশ কর্মকর্তা এসে ঐ পথচারীদের সরে যাওয়ার ইঙ্গিত করেন এবং ঐ ব্যক্তিকে গুলি করেন।

ঐ ব্যক্তির কর্মকাণ্ডে সন্দেহ হলে কয়েকজন সাধারণ নাগরিক তাকে আটক করে মাটিতে ফেলে দেন। এরপরেই পুলিশ এসে ঘটনাস্থলের নিয়ন্ত্রণ নেয়। নিহত ব্যক্তি ভুয়া বিস্ফোরকের ডিভাইস পড়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। হামলা রুখে দেয়া সাধারণ মানুষের প্রশংসা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনসহ অনেকে।