শীতের আগমন তাই গাছিরা খেঁজুর রস আহরণে গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। জমির সিমানা ও আঁকাবাঁকা পথের দুধার, ডোবা-পুকুরের পাড়ে সারি সারি খেঁজুর গাছগুলো এখন পরিচর্যা চলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উপকূল অঞ্চলে শীতের উপস্থিতি একটু দেরিতে শুরু হয়। খুলনার পাইকগাছায় শীতের আগমনীতে গাছিরা খেঁজুর রস সংগ্রহে গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। গ্রামীণ জীবনে শীত এক ভিন্ন মাত্রা নিয়ে আসে। নানা স্বপ্ন আর প্রত্যাশায় নিয়ে অনেকটা সময় কেটে যায় গ্রামের মানুষের। গাছিরা রস সংগ্রহে সারাদিন গাছ পরিচর্যা করেন। গাছিদের বহু কষ্টের মাঝেও প্রাপ্তি খেঁজুর গাছের রস আহরণে।
গাছিদের কাছে শীত এক কর্মব্যস্ত আনন্দময় সময়। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের সাথে খেঁজুরের রস ও শীতকালের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক। শীতের মূল উৎসবই হলো শীতের পিঠাপুলি ও পায়েশ। যার মূল উপাদান খেঁজুরের রস, ঝোলাগুড় ও পাটালী। শীতের সকালে রোদে বসে যেমন পিঠা খেতে শিশু থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ সকলের ভালোবাসেন। সব বয়সের মানুষ মেতে উঠে পিঠা খাওয়ার উৎসবে। কয়েকজন গাছির সাথে কথা বলে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামে খেঁজুরগাছ পরিচর্যার কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এখন রস সংগ্রহের পালা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৪৬ হাজার ২শত রস আহরণযোগ্য খেঁজুরগাছ রয়েছে। গাছি আফিল উদ্দীন জানান, অন্য সময় অন্য কাজ করলেও শীতে খেঁজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত থাকেন। এ অঞ্চলে খেঁজুর রসের পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় ভালো আয় করেন।
উপজেলার গদাইপুর, গোপালপুর, রাড়–লী, কপিলমুনি, মঠবাটী, পুরাইকাটী, মালথ, সিলিমানপুর সহ প্রায় সব গ্রামে কম বেশি খেঁজুর গাছ রয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে খেঁজুর গাছ থেকে রস আহরণ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। তাছাড়া গাছির অভাবে অনেক গাছ থেকে রস আহরণ করা যায় না। প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে খেঁজুর গাছের ভূমিকা অপরিসীম। তাই কৃষি অফিস থেকে এলাকার খেঁজুর গাছ রোপন করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।