পাবনার বেড়া উপজেলায় হুরাসাগর নদীর তীরে বৃশালিকা বেসরকারি রাজঘাট নামের অবৈধ একটি নৌবন্দর উচ্ছেদ করেছেন বিআইডাব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এই নৌবন্দর উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। স্থানীয়রা জানান, অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা এই নৌবন্দরের নিয়ন্ত্রণে ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়ার আংশিক) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর ভাই বেড়া পৌর মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল বাতেন।

বিআইডাব্লিউটিএ সূত্র জানায়, সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। বুল্ডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয় অবৈধ এই নৌবন্দর। এ সময় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা এবং সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযান চলাকালে অবৈধ নৌবন্দর থেকে ৯ টি জাহাজ ও পণ্য খালাশে নিয়োজিত ৯ শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় এক দশক আগে অবৈধ ভাবে পাবনার বেড়া উপজেলার হুড়াসাগর নদীর তীরবর্তী বৃশালিকা নামক স্থানে বেসরকারি রাজঘাটে নামে একটি নৌবন্দর প্রতিষ্ঠা করেন বেড়া পৌর মেয়র প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ্ব আব্দুল বাতেন। এই নৌবন্দর থেকে বিপুল টাকা আয় করলেও সরকার হারিয়েছে বিপুল পরিমান রাজস্ব। বিভিন্ন সময়ে সরকারের নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের বিআইডাব্লিউটিএ প্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধ ভাবে পরিচালিত বেসরকারি ‘রাজঘাট’ অপসারণে রাজঘাট কর্তৃপক্ষকে নোটিশ প্রদান করা হলেও তা কর্ণপাত করেননি অবৈধ নৌবন্দর স্থাপনকারীরা। বিআইডাব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের উর্ধ্বতন নির্দেশে সোমবার এটি উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এ সময় বুলডোজার দিয়ে অবৈধ ভাবে গড়ে তোলা নৌবন্দর গুড়িয়ে দেয়া হয়। অভিযান চলাকালে বিআইডাব্লিউটিএসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা নৌবন্দর থেকে ৯ টি জাহাজ আটক করেন। এ সময় জাহাজ থেকে পণ্য খালাশে নিয়োজিত ৯ শ্রমিককে আটক করা হয়। পরে তাদের ভ্রাম্যমান আদালত করে প্রত্যেককে ৩ হাজার টাকা করে জরিমানা ধার্য্য করেন সংশ্লিষ্ট ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক। অনাদায়ে ৩ মাসের সশ্রম কারাদন্ডের নির্দেশ দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে বিআইডাব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যম কর্মিদের বলেন, বিআইডাব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ একাধিক বার অবৈধ নৌবন্দরটি অপসারণে সংশ্লিষ্টদের নোটিশ দিয়েছে। কিন্তু অবৈধ নৌবন্দর সংশ্লিষ্টরা সে নোটিশের তোয়াক্কা না করে নৌবন্দরটি পরিচালনা করে আসছিল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মূখ্য হাকিমের নির্দেশে আমরা এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করছি। একই সাথে যারা এর সাথে জড়িত আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

সংস্থার চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, নদীতে জাহাজসহ নৌ পরিবহণ সুষ্ঠু ভাবে যাতায়াতের লক্ষ্যেই বিআইডাব্লিউটিএ সব সময় তৎপর। কেউ অবৈধ ভাবে দখল ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করলে কর্তৃপক্ষ তরিৎগতিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে করবে।