মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিতোতে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে দেশটির সেনাবাহিনী প্রধান ছাড়াও মিয়ানমারের বিমান বাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।​

বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয়গুলো হচ্ছে :

যে কারণে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরত যেতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে তা তুলে ধরা হয়। এই লক্ষ্যে মিয়ানমার কর্তৃক বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ASIAN Humanitarian Emergency Response Team এবং রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিকে খুব শিগগিরই settlement এলাকা পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানাবে বলে জানায়। বাংলাদেশ কর্তৃক বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে পরিকল্পিত বর্ডার রোড নির্মাণে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বিজিপি কর্তৃক সর্বাত্মক সহযোগিতার নিশ্চয়তা দেয়।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে স্থলমাইন এবং আইইডি (IED) এর উপস্থিতিতে বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয়টি জানানো হয়। মিয়ানমার সামরিক হেলিকপ্টার এবং ড্রোন কর্তৃক বাংলাদেশের আকাশ সীমা লঙ্ঘনের বিষয় তুলে ধরা হয়। সেন্ট মার্টিন দ্বীপেও তাদের ড্রোন পাঠানোর বিষয় তুলে ধরে বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা জানানো হলে এ বিষয়ে তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে জানায়। সীমান্ত এলাকার মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মাদক কারখানার উপস্থিতি এবং সেই মাদক বাংলাদেশে প্রবেশে বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয়টি জানানো হয়। মাদক পাচারের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনী সহযোগিতার আশ্বাস দেয়।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতিতে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে ভুল বোঝাবুঝি নিরসনে কাজ করতে সম্মত হয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনী কেবলমাত্র Counter Insurgency Operation এর জন্য সীমান্ত এলাকায় তাদের সৈন্য সমাবেশ ঘটায় বলে জানায়। তারা কখনো দুই দেশের সীমানা অতিক্রম না করার বিষয়ে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় যেহেতু মিয়ানমার সেনাবাহিনী Counter Insurgency Operation পরিচালনা করছে, তাই তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাহায্য চেয়েছে যে, যখন মিয়ানমার সেনাবাহিনী বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় Counter Insurgency Operation পরিচালনা করবে তখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যেন বাংলাদেশ ভূখণ্ড থেকে সীমান্ত এলাকায় তাদেরকে সহায়তা করে যাতে তাদের Insurgent group তাড়া খেয়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে এসে আশ্রয় নিতে না পারে।  দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে exchange program বৃদ্ধি, বিভিন্ন পর্যায়ের সৌজন্যমূলক ভিজিট বৃদ্ধি ইত্যাদি আলোচনা হয়।