খাগড়াছড়ি জেলা সদরের পেড়াছড়া এলাকা থেকে দুইটি বিদেশী পিস্তল’সহ ইউপিডিএফ (প্রসীত) গ্রুপের দুই সন্ত্রাসীকে আটকের ২৪ঘন্টার মধ্যেই আরো একটি অস্ত্র উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। আটককৃত ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী সূত্র। খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার পল্টনজয়পাড়া এলাকা থেকে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) এ অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, শনিবার আটককৃত সন্ত্রাসীদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৫ডিসেম্বর রবিবার সকাল পৌণে দশটায় খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার পল্টনজয়পাড়া এলাকায় খাগড়াছড়ি সেনা জোনের একটি দল বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ১টি ভারতীয় রাজপুত ম্যাগনাম শট গান এবং ৩০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে।
উল্লেখ্য, খাগড়াছড়ি জেলার সদর উপজেলাধীন পেরাছড়া এলাকায় গত ১৪ডিসেম্বর (শনিবার) দুপুর ১ ঘটিকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে খাগড়াছড়ি সেনা জোনের সদস্যরা। এসময় উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ (প্র“সীত গ্র“পের) নিতু চাকমা (৩৫), পলিময় ত্রিপুরা(৩৪) নামের দুইজন সশস্ত্র চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীকে দুইটি বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি ও চাঁদা আদায়ের রশিদ বই সহ আটক করে সেনা সদস্যরা।
আটককৃত ব্যক্তিদের মধ্যে নিতু চাকমা গত ৪ মে ২০১৮ সালে রাঙামাটির নানিয়াচর উপজেলা চেয়ারম্যান ও খাগড়াছড়ি জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য এডভোকেট শক্তিমান চাকমার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি তপন জ্যোতি বর্মাসহ পাঁচ হত্যাকান্ডের অন্যতম আসামি। খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রশিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে মাটিরাঙ্গায় ক্রেতা সেজে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীর কাছ থেকে একটি দেশীয় তৈরী পিস্তল উদ্ধার করেছে রিজিয়ন ইন্টেলিজেন্স কমিটির সদস্যরা। (১৩ ডিসেম্বর) গুইমারা উপজেলার বিনয় চেয়ারম্যান পাড়া নামক এলাকা থেকে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়। বিশেষ কৌশলে এ অস্ত্র জব্দ করার সময় ইউপিডিএফের দুজন সদস্য আহত হয়ে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে।

জানাযায়, মাটিরাঙ্গা সেনা জোনের আওতাধীন অক্ষয়মনি কার্বারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিকটবর্তী বিনয় চেয়ারম্যান পাড়া নামক এলাকায় পূর্বের কথামত ইউপিডিএফের তিনজন সদস্য অস্ত্র বিক্রির জন্য এসে পৌঁছে। বেলা পৌনে ১টায় সেখানে ক্রেতা সেজে বসেছিলেন গুইমারা রিজিয়নের আরআইসি ও ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য জিকু চৌধুরী। দু’পক্ষের মধ্যে কথাবার্তা হওয়ার পর ইউপিডিএফের এক সদস্যের কাছ থেকে দেশিয় তৈরি একটি এলজি হাতে নেন ছদ্মবেশি ক্রেতা জিকু। তিনি পরীক্ষানিরীক্ষা করে অস্ত্রটি তার কোমড়ে গুঁজে নেন। দরকষাকষি শুরু করে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন তিনি। মূহুর্তের মধ্যে সেনাবাহিনীর টহলদলের গাড়ি আসার শব্দ শুনে ইউপিডিএফের সদস্যরা দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করে। এসময় আরআইসি জিকু ইউপিডিএফের দুই সদস্যকে ঝাঁপটে ধরে ফেল্লে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। এসময় আহত অবস্থায় প্রাণপণে চেষ্টা করে দৌড়ে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি মাটিরাঙ্গা সেনা জোনের মাধ্যমে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।