গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ব্রাজিলের পকেট মাঙ্কি পরিবারের দুইটি শাবক জন্ম নিয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকা তথা ব্রাজিলের ছোট জাতের এ বানরকে কমন মার্মোসেট বানর বা পিগমি মাঙ্কিও বলা হয়। এদেশে শুধু সাফারি পার্কেই এ প্রজাতির বানর রয়েছে এবং এবারই প্রথম এ বানর শাবকের জন্ম দিল। পার্কে থাকা পূর্ণবয়ষ্ক তিনটি মার্মোসেট বানরের মধ্যে একটি মাদি এবং দুইটি পুরুষ। দুই শাবকসহ পার্কে এখন মার্মোসেট বানর পরিবারে সদস্য সংখ্যা হলো-৫।

বঙ্গবন্ধু সাফরি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তবিবুর রহমান জানান, বুধবার দিবাগত রাতে পার্কের কোয়ারিন্টাইন বেষ্টনীতে ওই শাবকের জন্ম হলেও বৃহস্পতিবার সকালে খাবার দিতে গিয়ে মায়ের পিঠে লেপ্টে থাকা শাবক দুইটি নজরে পড়ে পার্ক কর্তৃপক্ষের।

রবিবার সকালে সরেজমিনে পার্কের বিশেষ তত্ববধানে থাকা বেস্টনীতে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট আকৃতির মা বানরের পিঠে শাবক দুইটি শক্তভাবে আকড়ে ধরে রয়েছে। কাউকে দেখলেই তারা অত্যন্ত সতর্কভাবে এদিক ওইদিক ছুটাছুটি করছে। খুব ভালভাবে লক্ষ্য না করলে পিঠের বাচ্চা দুইটিকে বুঝাই যায় না। এদের দেখতে অনেকটা ছোট সিংহের মত মনে হয়। মাথায় সাদা লোমের ঝুটি রয়েছে।

সাফরি পার্কের কর্মকর্তা মো. তবিবুর রহমান জানান, এধরণের প্রতিটি পূর্ণ বয়ষ্ক বানরের ওজন ২০০-২৫০গ্রাম হয়ে থাকে। আকার হয় ৯-১০ইঞ্চি। এদের দেহ কালো ঘন পশমে ঢাকা থাকে। তবে মাথায় সাদা তুলার মতো ঝুঁটি ও হাত-পায়ে সাদা পশম থাকে। শরীর কালো পশম ছাড়া অনেক সময় ধূসর বর্ণের পশমেও আবৃত থাকে। এদের দেহের চেয়ে বেশ লম্বা একটি লেজও রয়েছে। এরা ২/৩ বছরের মধ্যে প্রজননক্ষম হয়। এদের গর্ভকালীন সময় হলো ১২০/১৫০দিন। প্রতিবারে এরা সাধারনত দুইটি বাচ্চা প্রসব করে থাকে। তবে ৩-৪টি বাচ্চা প্রসবেরও তথ্য রয়েছে। এরা আবদ্ধ অবস্থায় ১৫-১৭বছর এবং মুক্ত পরিবেশে ১২/১৩বছর বাঁচে। শাবকরা প্রায় তিন মাস মায়ের বুকের দুধ পান করে থাকে। তিন মাস পর তারা অন্যান্য খাবারও খেতে শুরু করে। গাছের, ছাল, কষ, পাতার রস, রেজিন, বিভিন্ন ফল জাতীয় পূর্ণবয়ষ্ক বানরের প্রধান খাবার।

পার্কের ওয়াইল্ড লাইফ সুপারভাইজার মো. আনিসুর রহমান জানান, ২০১৮সালের ৬আগস্ট ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর দিয়ে পাঁচারকালে শুল্ক ও গোয়েন্দা বিভাগ অন্যান্য পাখি ও প্রাণির সঙ্গে এ মার্মোসেট বানরও জব্দ করে। পরে তা সাফারি পার্ক কতৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তখন থেকেই এদের পার্কের বিশেষ বেষ্টিনীতে কোয়ারিন্টাইন-এ আবদ্ধ হয়েছে। এখনও এরা সেখানেই রয়েছে। দর্শণার্থীদের জন্য তা উন্মুক্ত করা হয়নি।