পাবনার ঈশ্বরদীতে মহান বিজয় দিবসের র‌্যালী করা নিয়ে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টার দিকে ঈশ^রদী শহরের মধ্য অরণকোলা, পোষ্ট অফিস মোড় ও আকবরের মোড়ে এসব ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ঈশ্বরদীতে র‌্যাব, ডিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

দলীয় সুত্র জানায়, বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ এমপির পক্ষে ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগ ও পৌরসভার ব্যানারে ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগে সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু ( জামাই শ্বশুড়) একই সময়ে পৃথক দুটি বিজয় র‌্যালীর আয়োজন করেন। উভয় র‌্যালীকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই পোষ্ট অফিস মোড় এলাকায় দুই গ্র“পের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। সকাল ১১টার দিকে উভয় গ্র“পের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এতে পোষ্ট অফিস মোড় এলাকাসহ আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ে রাস্তার দু’পাশের দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। রাস্তার উভয় পাশে প্রচুর সংখ্যক যানবাহন আটকা পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় কয়েকটি মোটর সাইকেল ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এরই মধ্যে পৌর আওয়ামী লীগের র‌্যালী করার জন্য সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি জুবায়ের বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটি খন্ড মিছিল এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের বিজয় র‌্যালীতে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমালের (সাবেক ভুমি মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু এমপির ছেলে) নেতৃত্বে অপর একটি খন্ড মিছিল মুখোমুখি অবস্থানে পৌঁছালে দুগ্রুপের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে উভয় গ্রুপকে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজয় র‌্যালীতে অংশ গ্রহণকারী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পোষ্ট অফিস মোড়ে উপজেলা যুবলীগের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হলে আচমকা পুলিশ দুই দফায় তাদের বেধড়ক লাঠিচার্জ করে। উভয় গ্রুপের হামলা-পাল্টা হামলা ও পুলিশের লাঠিচার্জে আহতরা হলেন, দৈনিক দেশ রূপান্তরের ঈশ্বরদী প্রতিনিধি মহিদুল ইসলাম, পৌর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মতলেব হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি যুবায়ের বিশ্বাস ও তার পিতা মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমান বিশ্বাস, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমাল, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনি, পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক বিশ্বাস, পৌর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ইউনুছ আলী মিন্টু, যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম মোল্লা, ৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সজিব হোসেন, ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আজিজ, ঈশ্বরদী সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সহ সভাপতি রাজু, যুবলীগ নেতা মাসুম, ছাত্রলীগ নেতা মুরাদ হোসেন টিটু, আল-আমিন হোসেন, রেজাউল করিম, মেহেদী হাসান সংগ্রাম, ইয়াকুব আলী, ইমরান হোসেন, ২ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ইলিয়াছ আলী।

এ ব্যাপারে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমাল বলেন, মহান বিজয় দিবসে আমাদের শান্তিপূর্ণ বিজয় র‌্যালীতে ঈশ্বরদী থানার ওসিসহ পুলিশ যেভাবে লাঠিচার্জ করেছে তা ন্যাক্কারজনক ঘটনা, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আহত জুবায়ের বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, পৌরসভার বিজয় র‌্যালীর প্রস্তুতির সময় সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সমর্থনে আয়োজন করা উপজেলা আওয়ামীলীগের ব্যানারের বিজয় র‌্যালীতে অংশগ্রহণকরারীরা তাদের র‌্যালীতে হামলা চালিয়ে তাদের সমর্থিত নেতা-কর্মিদের আহত করা হয়েছে।

ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) অরবিন্দ সরকার বলেন, আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বের কারণে দুটি পৃথক বিজয় র‌্যালীকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করেছে।