ক্যারাম খেলা নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং মনের ভিতর পুষে রাখা পঞ্জীভুত ক্ষোভ থেকেই হত্যা করা হয় রাজশাহী সাইন্স এন্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থী কামরুল ইসলাম ওরফে জাহিদকে।

হত্যাকাণ্ডের চারদিনের মাথায় রহস্য উদঘাটন করে শনিবার দুপুরে এসপির কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে নাটোর এসপি লিটন কুমার সাহা এই তথ্য জানান।হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সাথে জড়িত সরকারী এনএস কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অর্নাস প্রথম বর্ষের ছাত্র মিনহাজ হোসেন (২০) কে গ্রেফতার করার পর এই হত্যার রহস্য বেরিয়ে আসে। ইতোমধ্যে মিনহাজ উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডের ব্যবহৃত দা। মিনহাজ হোসেন সদর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের নুরুল হকের ছেলে। সে নানা বাড়ি নবীন কৃষ্ণপুর গ্রাম থেকে পড়াশুনা করে আসছিল।

প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি লিটন কুমার সাহা বলেন, সদর উপজেলার হালসা বাজারে একদিন ভ্যানে ওঠা নিয়ে মিনহাজ হোসেনকে দুটি থাপ্পর মারে কামরুল ইসলাম ওরফে জাহিদ। এরপর থেকেই মনের ভিতর পুঞ্জীভূত ক্ষোভ বাড়তে থাকে মিনহাজের।গত ৫জানুয়ারী সন্ধ্যায় কামরুল ইসলাম ওরফে জাহিদের প্রেমিকা সোনিয়ার সাথে দেখা করানোর কথা বলে নবীন কৃষ্ণপুর গ্রামের ইদুর মোড় থেকে কামরুলকে ডেকে ফাঁকা মাঠে নিয়ে যায় মিনহাজ। সেখানে মিনহাজ তার পকেট থাকা দা বের করে কামরুলের ঘাড়ে কোপ মারে। এতে কামরুল দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে মাটিতে পড়ে যায়, এরপর উপযুপরি কুপিয়ে কামরুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করে সে।

ক্ষোভে পঞ্জীভুত হয়ে কামরুলের বাম চোখ খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তুলে নিয়ে পুকুরে ফেলে মনের ক্ষোভ মিটায় মিনহাজ। এছাড়া লাশ বাঁশ ঝাড়ে ডালপালা দিয়ে ঢেকে লুকিয়ে রাখে। আর কামরুলের মোবাইল নিয়ে গিয়ে মাটির নিচে পুঁতে রাখে। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা ফেরদ দিয়ে আসে মালিকের কাছে। এসপি বলেন, হত্যাকাণ্ডের পরেও মিনহাজ ছিল সম্পূর্ন স্বাভাবিক। সে ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে কাল্পনিক গল্প বানিয়ে বিভিন্নজনকে পুলিশের সন্দেহভাজন করে তোলেন। আমরা প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছি। অহেতুক ভাবে কোন নিরাপরাধ ব্যক্তি যাতে জড়িয়ে না যায়।এজন্য প্রতিটি ঘটনা আমরা ভালভাবে যাচাই-বাছাই করি। যাতে করে প্রকৃত অপরাধী আইনের আওতায় আসে। এঘটনায় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেটি তদন্ত করছে সদর থানার এসআই সামছুজ্জোহা।এসময় প্রেস ব্রিফিংয়ে এএসপি আকরামুল হোসেন, সদর সার্কেলের এএসপি আবুল হাসনাত, এএসপি (হেডকোয়াটার) আসাদুজ্জামান মিয়া, ডিএসবির ডিআইও-১ ইব্রাহিম হোসেন, জেলা ডিবি পুলিশের ওসি সৈকত হাসান, সদর থানার ওসি তদন্ত ফরিদুল ইসলাম।