প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় (জমি আছে ঘর নাই) হতদরিদ্রদের জন্য নির্মিত লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ঘর পেয়েছিলো লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার মোমিনুর নামে এক স্বচ্ছল ব্যক্তি। যিনি কয়েকমাস যেতে না যেতেই সেই ঘর ভেঙ্গে নিজে থাকার জন্য আলিশান বাড়ি তৈরী করেন।ফলে হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দের সরকারি ঘরের তালিকা নিয়ে অনিয়ম আর দুর্নীতির বিষয়টি ফুটে উঠেছে। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গরিব-দুঃখি মানুষ সরকারি এ ঘর প্রভাবশালীদের দেয়া হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এলাকার হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী।

সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ঐ উপজেলার দলগ্রাম ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের হাছেন আলী হাছুর ছেলে মোমিনুর। আর্থিক অবস্থা তার খুবই ভালো। ঢাকায় তার নিজস্ব একটি অটোরিকশা গ্যারেজে রয়েছে। সেখান থেকে মাসে প্রায় লক্ষ টাকা আয় আসে তার। কয়েকমাস আগে হতদরিদ্রদের জন্য এক লক্ষ টাকা ব্যয়ে সরকারি ঘর আসলে তিনি স্থানীয় (৪,৫ ও ৬ নং) ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য এনছেনা বেগমের সাথে একটি ঘরের জন্য যোগাযোগ করেন। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গরীব না হওয়া সত্ত্বেও আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি ঘর সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মোমিনুরের নামে বরাদ্দ দেন ওই মহিলা সদস্য এনছেনা বেগম। ওই ঘরে তার পরিবারের কেউ একদিনও থাকেননি। উল্টো কয়েক মাস পরে সেই ঘর ভেঙ্গে আলিশান বাড়ি তৈরী করেছেন। ফলে এলাকা জুড়ে এনিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে মোমিনুরের চেয়েও এলাকায় অনেক অসহায় মানুষ ছিলেন মহিলা সদস্য ঘরের তালিকায় তাদের নাম না দিয়ে অর্থের বিনিময় মোমিনুরকে ঘরটি দিয়াছে। যে আলীশান বাড়ী তৈরী করতে পারে সে কেমনে সরকারী ঘর পেল। এ নিয়ে এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

এ বিষয় মোমিনুরের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে সরকারি ঘর ভেঙ্গে আলিশান বাড়ি তৈরী করার বিষয় জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি ঢাকায় থাকি আমার নিজস্ব একটি অটোরিকশার গ্যারেজ আছে অনেক কষ্টে টাকা রোজগার করে সরকারের পাওয়া বাড়িটি ভেঙ্গে পাকা বাড়ী তৈরী করেছি। ঘরটির তালিকা কে দিয়াছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান মহিলা ওয়ার্ড সদস্য এনছেনা দিয়েছে। তবে মোমিনুরের স্ত্রী জানান, বাতাসে ঘরটি ভেঙ্গে পড়েছিলো তাই আমরা সেটি ভেঙ্গে ফেলে নতুন বাড়ি তৈরী করেছি।
এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য এনছেনা বেগম বলেন, মোমিনুরকে ঘরটি যখন দিয়েছি তখন তার কিছুই ছিল না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল হাসান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে সরকারের দেয়া ঘর ভেঙ্গে ফেলার কোন বিধান নেই। খোজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।