পাবনার বিশিষ্ট পরিবহণ নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা সর্বজন শ্রদ্ধেয় বীরমুক্তিযোদ্ধা ওয়াজি উদ্দিন খান মারা গেছেন। শুক্রবার সকাল নয়টায় পাবনা শহরের আটুয়া হাউজপাড়া মহল্লার নিজ বাসায় বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়েমহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
মরহুম ওয়াজি উদ্দিন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি, পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি, পাবনা-০৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। বর্ষীয়ান এই নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্টজন ছিলেন। দল মত নির্বিশেষে সকল মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা করতেন। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শোকের ছায়া নেমে আসে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলাসহ পাবনার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামগঞ্জ থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ তাঁকে এক নজর দেখার জন্য আটুয়াস্থ বাসভবণে আসতে শুরু করে।
তার মৃত্যুতে দলীয় নেতাকর্মী, পরিবহন শ্রমিকসহ সাধারন মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে বাসভবনে একনজর দেখতে ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে ছুটে যান সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামীলীগ, বিএনপি, পরিবহন নেতাসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ।
পারিবারিক সুত্র জানান, আগামীকাল শনিবার বেলা ১১টায় চাটমোহর বালুচর মাঠে মরহুমের প্রথম জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মরদেহ নেয়া হবে পাবনা জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে পাবনা পুলিশ লাইন মাঠে দুপুর ২টায় হবে দ্বিতীয় জানাযার নামাজ। জানাযা নামাজের আগে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।
উল্লেখ্য: পাবনার সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের ভাঁজপাড়া গ্রামে ১৯৩৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন ওয়াজি উদ্দিন খান। ভূট্টা আন্দোলন, গণঅভ্যূত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধে তার ছিল অনন্য ভূমিকা। ১৯৭২ সালে তিনি পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে এখনও পর্যন্ত উক্ত পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘ ২৫ বছর। ১৯৮৬ এবং ১৯৯৬ সালে ওয়াজি উদ্দিন খান পাবনা-০৩ (চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর) আসনে দুইবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত পাবনা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে জেলার ক্রীড়া ক্ষেত্রকে উজ্জীবিত করে রাখতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭৯ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।