চীনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব যেন কমছেই না। দিন যতই যাচ্ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। নতুন করে দেশটির হুবেই প্রদেশে আরও কমপক্ষে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আঞ্চলিক স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে। ফলে সেখানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭২২ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া চীনের হুবেই প্রদেশ ও বিভিন্ন এলাকায় এই পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৫৪৬ জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দেশটির ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বিভিন্ন স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। দুই দশক আগে চীনের মূল ভূখণ্ড এবং হংকংয়ে সার্স ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মৃতের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে করোনাভাইরাস। দেশটির আঞ্চলিক স্বাস্থ্য কমিশন জানাচ্ছে, চীনের কেন্দ্রীয় হুবেই প্রদেশে নতুন করে আরও কমপক্ষে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ভাইরাসটি গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর হুবেই প্রদেশের উহান শহরেই প্রথম ধরা পড়ে। এই ভাইরাসে চীনের বাইরে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন হংকংয়ের এবং অন্যজন ফিলিপাইনের।

চীনসহ বিশ্বের ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এসব দেশ ও অঞ্চলে ৩১০ জনের বেশি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অনেক দেশই তাদের নাগরিকদের চীন ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের চীন থেকে ফিরিয়ে নিচ্ছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইন্স ইতোমধ্যেই চীনে তাদের ফ্লাইট বাতিল করছে। সেন্ট্রাল ফর ডিজেজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এক মাসের বেশি সময় ধরে বিশেষজ্ঞদের একটি দলকে চীনে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়ে আসছে।

ওই দলটিকে চীনে করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনে সহায়তা করতে পারবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত চীনের তরফ থেকে কোনো ধরনের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কী কারণে চীন এমন করছে সে বিষয়টিও তারা ব্যাখ্যা করেনি। দু’সপ্তাহ আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও একই ধরনের প্রস্তাব দিয়েছে। এ ব্যাপারেও কোনো সাড়া মেলেনি।

এ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায়, বেলজিয়াম, কম্বোডিয়া, কানাডা, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, হংকং, ভারত, ইতালি, জাপান, ম্যাকাও, মালয়েশিয়া, নেপাল, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, শ্রীলঙ্কা, সুইডেন, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভিয়েতনামে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।