সিরাজগঞ্জের বীরঙ্গনা নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠক, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অন্যতম সদস্য ও উন্নয়নকর্মী সাফিনা লোহানী (৬৭) আর নেই। সোমবার রাতে হৃদরোগসহ বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লা .. রাজেউন)। মৃত্যুকালে স্বামী, এক ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

মরহুমার দেবর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিরাজগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার গাজী আশরাফুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে সাফিনা লোহানী নানা জটিলরোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী ছিলেন। সোমবার রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আজ মঙ্গলবার বাদ যোহর জানাযা শেষে শহরের মালশাপাড়া কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।’

সাফিনা লোহানীর ডাক নাম ছিল বেবি লোহানী। ১৯৫৩ সালে ১ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জ শহরে ঐতিহ্যবাহী লোহানী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সাল থেকে ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন৷ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় দুই মাসের সন্তান কোলে নিয়েও স্বাধীনতাযুদ্ধের সঙ্গে ওতপ্রোতোভাবে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন তিনি৷

প্রাণ বাজি রেখে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন৷ স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আহ্বানে ড. নীলিমা ইব্রাহীমের নেতৃত্বে নারী পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের পুনর্বাসন ও শতাধিক নির্যাতিত নারীর পুনর্বাসন করে এসেছেন তিনি।

পরবর্তীতে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সদস্য হিসেবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন। তিনি বেসরকারি সংস্থা উত্তরণ মহিলা সংস্থার পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তার স্বামী মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম চৌধুরী দীর্ঘদিন দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার উত্তরাঞ্চলের ব্যুরো প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।