কেবল সামাজিক বাঁধাই ছিল না , ছিল দারিদ্রতা, বাল্যবিবাহের চোখ রাঙ্গানী , ছিল ফুটবলার হবার জন্য পর্যাপ্ত সরঞ্জামের অভাব। আর সব প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নিভৃত একটি গ্রামে সুযোগ-সুবিধাবঞ্চিত সহজ সরল মেয়েরা ফুটবল খেলছে। প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়েদের ভালো ফুটবলার তৈরিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার ক্রীড়া অনুরাগী অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম। মহিলা একাডেমির সংগঠক তাজুল ইসলাম দরিদ্রও নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েদের নিয়ে জেলা শহর থেকে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার দূরে অজপাড়াগাঁয়ে ব্যক্তি মালিকানায় নিজ উদ্যেগে গড়ে তুলেছেন রাঙ্গাটুঙ্গি মহিলা ফুটবল একাডেমি।

এই মেয়েরা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টে জেলায় কয়েকবার চ্যাম্পিয়ন , রংপুর বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, জাতীয় পর্যায়ে গিয়েও নিরাশ হয়নি । বেশকয়েকজন বিএকেএসপিতে সুযোগ পেয়েছে। সম্প্রতি ফুটবল ফেডারেশন থেকে ২ জন খেলোয়াড় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে ১০ লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদানও পেয়েছে। সেই টাকায় তাদের দরিদ্র পরিবার ঘরবাড়ি নির্মাণসহ জমি কিনে ফসল ফলাচ্ছেন। তাদের দেখে এলাকায় মহিলা খেলোয়াড়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন মহিলা ক্রীড়া এ প্রতিষ্ঠানটি । ইতোমধ্যে রাঙ্গাটুঙ্গি মহিলা ফুটবল একাডেমির সোহাগী কিসকু ও মুন্নী আক্তার আদূরী বর্তমানে বিভিন্ন দেশেও বাংলাদেশের হয়ে খেলছেন। বিথীকা কিসকু, কোহাতী কিসকু, কাকলী আক্তার, শাবনুর নিয়মিত অনুশীলন করছেন। সাথে ছোট ছোট মেয়েরাও। শুরুর কথা রূপকথার মতোই মনে হতে পারে।

রাণীশংকৈল রাঙ্গাটুঙ্গি এলাকার মাঠে প্রীতি ফুটবল ম্যাচও অনুষ্ঠিত হয়।তখন তাদের ডেকে এলাকার ক্রীড়া অনুরাগী অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম ফুটবল খেলার কথা বলেন। ২০১৪ সালের পর থেকে রাঙ্গাটুঙ্গি মহিলা ফুটবল একাডেমিকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন তারা বেশ এগিয়ে । সেই সঙ্গে ঠাকুরগাঁওয়ের নাম ছড়িয়ে দিবে বিশ্বব্যাপী।

গৌতম চন্দ্র বর্মন
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি