সারা বিশ্বে সর্বাধিক কথিত ১০০ ভাষার মধ্যে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশের সিলেটি ও চাটগাঁইয়া ভাষা। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) চিত্রের মাধ্যমে তথ্য উপস্থাপনকারী ওয়েবসাইট ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্টের প্রকাশিত এক প্রবন্ধে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রবন্ধে বলা হয়, সর্বাধিক কথিত ১০০ ভাষার তালিকায় ১ কোটি ৩০ লাখ ভাষাভাষী নিয়ে চাটগাঁইয়া ভাষা অবস্থান করে নিয়েছে ৮৮ নম্বরে। আর ১ কোটি ১৮ লাখ ভাষাভাষী নিয়ে সিলেটির অবস্থান ৯৭তম। বিশ্বে বর্তমানে প্রচলিত ভাষাগুলোকে নিয়ে পরিসংখ্যান প্রকাশকারী বার্ষিকী ‘ইথোনোলগ’ এর ২২তম সংস্করণের ওপর ভিত্তি করে “ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট” প্রবন্ধটি রচনা করে। ‘ইথোনোলগ’ এর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বিভিন্ন দেশে ৭ হাজার ১১১ ভাষা প্রচলিত রয়েছে।

ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্টের তালিকায় বাংলার অবস্থান সপ্তম। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে ২৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষ ভাষাটিতে কথা বলে থাকে। এরপরই রয়েছে রাশিয়ান ও পর্তুগিজ ভাষা।

শতাধিক কোটি ভাষাভাষী নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই ইংরেজি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কথিত ভাষা হিসেবে তালিকায় প্রথম স্থান দখল করেছে। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ এই ভাষায় কথা বলে। ইংরেজি বাদে প্রথম পাঁচটি ভাষার মধ্যে রয়েছে-মান্দারিন, হিন্দি, স্প্যানিশ এবং ফরাসী। তালিকায় উর্দুর অবস্থান ১১তম।

প্রবন্ধটির তথ্য অনুযায়ী, ইংরেজি ভাষাভাষীদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ মানুষ এটি দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে গ্রহণ করেছে। অপর দিকে ১৭ শতাংশ মান্দারিন ভাষাভাষীর কাছে এটি দ্বিতীয় ভাষা। ৪৬ কোটি ভাষাভাষী নিয়ে স্প্যানিশ তালিকার শীর্ষের দিকে অবস্থান করে নিয়েছে। ইউরোপ ছাড়াও ভাষাটি ল্যাতিন আমেরিকায় বহুল ব্যবহৃত।

উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, চাঁটগাঁইয়া ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের ইন্দো-আর্য শাখার পূর্বাঞ্চলীয় ইন্দো-আর্যের উপশাখা বাংলা-অসমীয়ের সদস্য। ইন্দো-আর্যের হিন্দির সঙ্গে চাটগাঁইয়ার পরোক্ষ মিল রয়েছে।

ভাষাবিজ্ঞানীদের মতে, চাঁটগাঁইয়া পালি ভাষা থেকে এসেছে যা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাসমূহের একটি কল্পিত পূর্বসূরী প্রত্ন-ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা এর উত্তরসূরী। প্রধানত বৃহত্তর চট্টগ্রামের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পার্বত্য তিন জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দবানের মানুষেরা চাঁটগাঁইয়া ভাষায় কথা বলে।

অন্যদিকে সিলেটি ভাষা বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে এবং ভারতের আসাম রাজ্যের বরাক উপত্যকায় প্রচলিত একটি ইন্দো-আর্য ভাষা। এছাড়াও সিলেট বিভাগের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলসমূহ এবং ভারতের মেঘালয়, ত্রিপুরা, মণিপুর ও নাগাল্যান্ড রাজ্যের কিছু অংশেও ভাষার ব্যবহার রয়েছে।