সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পাঁচ বাংলাদেশির মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে ফোন করে এ কথা জানান। বুধবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) একটি বিশেষ বৈঠক উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের কাছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

আব্দুল মোমেন বলেন, ‘সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বাংলাদেশি রোগীর বিষয়ে আজ সকালে ফোনে কথা বলেছেন আমার সঙ্গে। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশি এক রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।’

তিনি আরও বলেন, ‘৩৯ বছর বয়সী ওই রোগী শ্বাসকষ্টসহ নানা রকম শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। ১৩ দিন ধরে তিনি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। কিন্তু গতকাল থেকে তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন না। সাড়া না দেওয়ায় সিঙ্গাপুর যথেষ্ট উদ্বিগ্ন।’

সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গুরুতর অসুস্থ বাংলাদেশি রোগীর সুস্থতার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। সিঙ্গাপুরে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ জন। তাদের মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশি। গত ৯ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুরে প্রথমবারের মতো ৩৯ বছর বয়সী এক বাংলাদেশির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশি ওই প্রবাসী সিঙ্গাপুরের এনসিআইডির আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।

এর একদিন পর ১১ ফেব্রুয়ারি সেলেটার অ্যারোস্পেস হেইটসের নির্মাণাধীন স্থাপনায় কর্মরত আরও এক বাংলাদেশির শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়। পরে ১৩ ফেব্রুয়ারি ৩৭ ও ৩০ বছর বয়সী আরও দুই বাংলাদেশি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানায় সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সিঙ্গাপুরের ওয়ার্ক পাসধারী এ দুই বাংলাদেশিও সেলেটার অ্যারোস্পেসে কর্মরত ছিলেন।

সবশেষ গত শনিবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন ২৬ বছর বয়সী আরেক বাংলাদেশি। এর আগে সিঙ্গাপুরে যে চার বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন; তাদের সঙ্গে একই জায়গায় কাজ করতেন তিনি।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরেই সর্বপ্রথম করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়। পরে এটি পুরো চীনে এবং চীনের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। চীনের বাইরে সিঙ্গাপুরেই সবচেয়ে বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে এ পর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ৭৪ হাজার ১৮৫ জন। সিঙ্গাপুর ছাড়া পৃথিবীর কোথাও আর কোনো বাংলাদেশি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।