মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আজ বেনাপোল সীমান্ত এলাকায় ভারত-বাংলাদেশের হাজার হাজার বাংলা ভাষাপ্রেমী মানুষের পদচারণায় ছিল মুখর । শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বেনাপোল- পেট্রাপোল সীমান্তের শূন্যরেখায় (নোম্যান্সল্যান্ড) অস্থায়ী শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। দুই দেশের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ীসহ সরকারের প্রতিনিধিরা বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তের অস্থায়ী শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্র“য়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি গানের সুর সবার মুখে। বাংলা ভাষার টানে ভৌগোলিক সীমারেখা ভুলে বেনাপোল- পেট্রোপোল চেকপোস্টের নোমান্সল্যান্ডে মিলিত হয় দুই বাংলার হাজারো মানুষ।

আলাদা মঞ্চের অনুষ্ঠানে দুই দেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়। তাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হয় ভাষা শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন সঙ্গীত। শুক্রবার বেনাপোল সীমান্তের নো ম্যানসল্যান্ডে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের পক্ষে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বক্তৃতা করেন।

তিনি বলেন, নাগরিকত্ব সব দেশের জনগণের অধিকার। কোন দেশের নাগরিকত্ব হরণ সমুচিত নয়। সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া বাংলা ভাষাপ্রেমী মানুষের ভাষাকে রুদ্ধ করতে পারে না। পারে বিভেদ সৃষ্টি করতে। ১৯৫২র ভাষা সংগ্রামের পথ ধরেই আমাদের স্বাধীনতা এসেছে। এই স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের জনগণ ও সরকার আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাই স্বাধীনতা যুদ্ধে সূচিত হয়েছে ভারতের সঙ্গে আমাদের আত্মার সম্পর্ক, নাড়ির সম্পর্ক। এ জন্য আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। বাঙালির অর্জনকে দুই বাংলা একসঙ্গে পালন করছি, এটা খুবই গর্বের বিষয়। দুই দেশের সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও মৈত্রীতে এটা অনুপ্রেরণা যোগাবে।

অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন,আপনারা বাঙ্গালীরা ভাষা ও স্বাধীনতার জন্য অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। ভাষা আর স্বাধীনতার জন্য এত ত্যাগের নজির পৃথিবীতে অন্য কোথাও নেই। এ জন্য আপনারা গর্বিত জাতি।

যশোর-১ (শার্শা) আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ, পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন, বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আব্দুল জলিল, যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক মো. সেলিম রেজাসহ উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।