আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, দেশকে সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের দিকে নিয়ে যেতে হলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ ও ধারণ করতে হবে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন “আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আয়োজিত “বায়ান্ন থেকে একাত্তর ও বঙ্গবন্ধু থেকে বাংলাদেশ” শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।

তারা বলেন, “আমরা বড় ভুল করেছি, ইতিহাস থেকে বিচ্যুত হয়েছি। ইতিহাস জানতে হবে, জাতীয় বীরদের সম্মান করতে হবে। তবেই বাঙালি জাতি আত্মমর্যাদা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, গণহত্যার ইতিহাস ছাড়া সত্য আর কিছুই হতে পারে না।”

সংগঠনের সভাপতি মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও কোষাধ্যক্ষ আহমাদ রাসেল এর পরিচালনায় আলোচনায় বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধের গবেষক কর্ণেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির, মুক্তিযুদ্ধকালে ক্র্যাক প্লাটুনের অন্যতম সদস্য ও এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সদস্য মকবুল-ই এলাহী চৌধুরী মশগুল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান শহিদ, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’র প্রেসিডিয়াম সদস্য শহীদ সন্তান প্রফেসর ড. কাজী সাইফুদ্দিন, শহীদ সন্তান জোবায়দা হক অজন্তা, সহ সভাপতি ওমর ফারুক সাগর, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আল আমিন মৃদুল ও যুগ্ম সম্পাদক আজহারুল ইসলাম অপু।

মুক্তিযুদ্ধের গবেষক সাজ্জাদ আলী জহির বলেন, “গরীব মানুষ মুক্তিযুদ্ধের জন্য অনেক অত্যাচার নিপীড়ন সহ্য করেছে। মায়েরা বুকে পাথর বেধে তাদের সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়েছে। পাকিস্তানী হানাদারেরা এদেশের নিরীহ মানুষের উপর গণহত্যা চালিয়েছে। গণহত্যা-অত্যাচারের ইতিহাস ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পূর্ণ হবে না। তাই আমাদের ইতিহাস জানতে হবে এবং ইতিহাসকে আগামী প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে।”

বক্তারা বলেন, “আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ একদিনে প্রতিষ্ঠিত হয়নি, এর পেছনে রয়েছে দীর্ঘ গৌরবময় ইতিহাস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মৃজিবুর রহমান ২৩ বছর আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেন। তাঁর নেতৃত্বে আমাদের পূর্বসূরিরা লড়াই-সংগ্রাম করে মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষায় ১৯৫২ সালে বুকের রক্ত দিয়েছে। ১৯৭১ সালে মাতৃভূমিকে স্বাধীন করতে জীবন উৎসর্গ করেছে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে আমাদের একুশে ফেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা পেয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে আমাদের বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের বিষ্ময়। এসব ইতিহাস আমাদের নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে।”

বক্তারা আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের সন্তানদের নিয়ে স্বাধীনতাবিরোধীদের অনুগামী একটি চক্র সুগভীর ষড়যন্ত্রে মেতেছে। তারা মুক্তিযোদ্ধাবান্ধব বর্তমান সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে বিভ্রান্ত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী প্রশাসন গড়ার ষড়যন্ত্র করছে। বক্তারা মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা বিরোধী ষড়যন্ত্র এবং জঙ্গি সন্ত্রাস দমনে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।