জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানিতে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার সর্বশেষ প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিতে চাওয়া খালেদার এই জামিন আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আগামী বৃহস্পতিবার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কে এম জহিরুল হকের বেঞ্চে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এই জামিন আবেদনের শুনানি হয়। আদালতে খালেদার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ও অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।

শুনানি শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জয়নুল আবেদীন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য দিন দিন অবনতি হচ্ছে। তার শারীরিক অবস্থা খুবই নাজুক- আমরা এবিষয়ে আদলতকে জানিয়েছি। আমরা বলেছি তার উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাওয়া উচিত। অ্যাটর্নি জেনারেলও তার বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।

তিনি আরও বলেন, আগামী বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পরদিন বৃহস্পতিবার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

গত বুধবার খালেদা জিয়ার আইনজীবী আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করলে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন। আবেদনটি উপস্থাপন করেন খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। এর আগের দিনি মঙ্গলবার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া জামিন চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেন আইনজীবী সগির হোসেন লিয়ন।

অসুস্থতা ও বয়স বিবেচনায় ‘মানবিক কারণে’ খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে আবেদনে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তার উন্নত চিকিৎসা হচ্ছে না। জামিন পেলে তিনি চিকিৎসা জন্য বিদেশে যেতে চান। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে এই মামলায় আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন।

দুর্নীতির দুই মামলায় মোট ১৭ বছরের দণ্ড মাথায় নিয়ে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গত এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দল ও পরিবারের সদস্যরা তাকে অন্য হাসপাতালে নিতে চাইলেও তাতে অনুমতি মেলেনি।

গত বছরের ৩০ এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অর্থদণ্ড স্থগিত এবং সম্পত্তি জব্দের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়ে দুই মাসের মধ্যে ওই মামলার নথি তলব করেছিলেন।

এরপর ২০ জুন বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। গত বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করা হয়।

২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন। এদিকে উচ্চ আদালতে খালেদার জামিন আবেদনের শুনানি বিষয়ে শনিবার কয়েক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এতে লন্ডন থেকে স্কাইপে যোগ দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।