চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর ২ নম্বর গেট এলাকায় ট্রাফিক পুলিশবক্সে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক ট্রাফিক সার্জেন্ট ও সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক দগ্ধ হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঘটা এ বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন তিন পথচারীও। দুই পুলিশ সদস্যকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হঠাৎ এ বিস্ফোরণের ঘটনায় নগরীর ব্যস্ততম মোড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে বিস্ফোরণের পরপরই এলাকাটি ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে গেছেন কাউন্টার টেররিজম, সোয়াত ও পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, বিস্ফোরণটি রহস্যজনক। ঘটনাস্থল থেকে তারা বিস্ফোরণের আলামত পেয়েছেন। তবে কে বা কারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। এর সঙ্গে ঢাকায় পুলিশবক্সে নব্য জেএমবির বোমা হামলার যোগসূত্র রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। রাত সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন ভয়ে দিগি¦দিক ছোটাছুটি করে। এ সময় সেখানে ছিলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট আরাফাত, সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক আতাউর। বিস্ফোরণে তারা দগ্ধ হন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন পথচারী জাহিদ বিন জাহাঙ্গীর, মো. সুমন ও দশ বছরের এক শিশু।

চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘দুই পুলিশ সদস্যকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশি দগ্ধ হয়েছেন সার্জেন্ট আরাফাত। তার মুখমণ্ডল ও হাত পুড়ে গেছে। আতাউরেরও মুখমণ্ডল দগ্ধ হয়েছে। বর্তমানে তাদের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহত তিন পথচারীকেও চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী অহিদ বিন ইউনুছ নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানান, হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশবক্সের ভেতর আগুনও দেখা যায়। পুলিশবক্সের চারদিকের কাচ ভেঙে পড়ে গেছে। তবে টিনের ঘেরাও অক্ষত রয়েছে। বিস্ফোরণের কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ এসে সবাইকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ায় এর বেশি কিছু জানা যায়নি।
সিএমপির ট্রাফিক (উত্তর) বিভাগের ডিসি শহীদুল্লাহ বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে বক্সের ভেতরে কেউ কিছু রেখে গেছে। পরে সেটার বিস্ফোরণ হয়। কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে এটি তদন্ত করছে। আশপাশের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করছেন তদন্তকারীরা।’ ঘটনাস্থল থেকে ঘুরে আসা নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম বলেন, প্রথমে ধারণা করেছিলাম শর্ট সার্কিট। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি এটা বিস্ফোরণ। আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের অগোচরে কেউ হয়তো বিস্ফোরক রেখে গেছে। ঢাকা থেকে বোম্ব ডিসপোজাল টিম আসছে। এটা কী ধরনের বিস্ফোরক ছিল, তারা এসে নিশ্চিত করবে।